Saturday 24 May, 2008

স্বপন-জমিনে খসড়া-আবাদ


আমাদের এমন একটি শব্দ বাছতে হবে যা ব্লগিঙের মূল মুডটিকে রেফ্লেক্ট করবে। অর্থাত ভাবানুবাদ-মর্মানুবাদ টায়প। তাচ্চেয়েও বড়ো কথা হলো, শুধু মাত্র তথাকথিত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রান্তজ থেকে প্রথিতযশা, সমাজের সকল শ্রেণীর দ্বারা স্বীকরণ সাধিত হবে - চাই এমনই এক শব্দসখ্যতার। ওসব অপরবাস্তব-ফাস্তব সেন্থেটেক কয়নেজ একেবারেই পাব্লিক খাইবে না! প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় অদূর ভবিষ্যতে চাষার ছেলে ব্লগাইতে ব্লগাইতে উহাই প্রথম প্রশ্ন করিবে যে অপরবাস্তব খায় না মাথায় মাখে?

নেট, ওয়েব, কম্প্যুটর - এই সব শব্দের আজো কোনো লাগসই বাংলা বেরোয়নি। এই বার দেখো, ব্লগ লোকে পিসিতে পড়ে, ঠিক কি না? তো কম্পু খুলে যখন কিছু লেখালিখি করা হয়, সেই ফায়লটাকে আমাদের লায়নের ভাষায় বলি সফট কপি, আর যখন প্রিন্ট নেই তখন হার্ড কপি বেইরে আসে।

প্রথমে ব্লগের বাংলা হিসেবে দিস্তেখাতা কথাটার ওপর হভ্যার করছিলুম। ছোটোবেলায় একটা রেচ্যুয়্যাল ছিল - কয়েক দিস্তা লুজ কাগজ কিনে সেইটে সেলাই করে তাতে পড়ালিখা চালাতে হতো। দিস্তেখাতা কথাটা এই কোমল-কোমল সফট-কপি ভাবটা অনেকটাই কনট করে।

তারপরে খসড়াখাতা কথাটি মনে এল। রে যে ভাবে আপাদমস্তক বাঙালী হয়েও একান্তই আন্তর্জাতিক - এই খসড়াখাতা শব্দটিও ঠিক তাই। তার কারণ আছে। এই সোয়াই বাংলা-ব্লগিন মঞ্চেই খসড়া রচনা হয়েছে, প্রাপ্তির মতো নিষ্পাপ ফুল যাতে বৃন্তচ্যুত না হয় কোনো ভাবেই, পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ভ্যাল্রিকে তাঁর হৃত সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার।

ধুলোমাখা চাঁদের কাছে যেতে বা গন্দম ছিঁড়ে নিতে, ঠিক যতটা পথ হেঁটে যেতে হয়, সেই ফ্ল্যাগফ যে এখান থেকেই হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। আমরা খসড়া লিখি, কারণ আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি, এক সুন্দর ভবিষ্যতের - এই ব্লগিন যেন আমাদের সেই স্বপ্নপূরণের স্যুডোকোড।

কতো শত স্বপ্নের খসড়া যে লায়ভজর্নল থেকে ওয়র্ডপ্রেসে রোজ রোজ রচনা হয়ে চলেছে তা কে জানে। আর যেদিন এই সবগুলো ফাংশ্ন মেনের মধ্যে কল করা হবে, ঠিক সেই দিনটা দেখার আশায় আশায় বেঁচে আছি আমরা সবাই, নয়-এগারো ভুলে সামনের দিকে তাকিয়ে আছি বুক ভরা প্রত্যাশায় - টাকার গাছটা গুঁড়িশুদ্ধু মরে যাবে আর সেই কোথায়-হারিয়ে-যাওয়া ফুলগুলো ফিরে আসবে আবার।

হে ব্লগার, থুড়ি, খসড়ালেখক - শুভ স্বপ্ন দেখা!

No comments: