Tuesday 27 January, 2009

কোমা কাটার পরে

বছর দেড়েক আগে এক দিন ঠিক
পথ ভুলে ছিল যে হালভাঙা নাবিক,
ফেনা সরে পথ করে দেয় অভিমান
আজ মাঝদরিয়ায় সেই সোহাগেরই সাম্পান।

জানো? 
কাল এসে পড়েছিল এক ফালি রোদ 
সেই গরাদহীন জানালায়,
স্নেহের বেসাতি সাজিয়ে রোজ 
সেথা বসে থাকে যে অবোধ!

শিকারী সুখের জঠরে জেগে থেকে খুশিদের খোঁজ
সেইসব, অনাবিল, সোঁদানীল - ভালোবাসারই প্রতীক্ষায়
দিন যায়, কবে ছুঁয়ে দিবি মোরে
বাবা বলে ডেকে কুসুম-সকালে - 
ঘাসভেজা ভোরের প্রথম প্রহরে।

রাখা আছে পাটভাঙ্গা প্রেম
এলে পরে আমার সে মে'
শেষ হবে পাপ, অভাগার অভিশাপ, আর যতো সংলাপ...
...সাজানো, গোছানো, cologneস্নাত - এলে পরে আমার সে মে'।

পাতালপুরীতে আনন্দ

টিকেটের লম্বা লায়নের অনেকটা পেছনে পড়ে যায় আনন্দ। ডাঁয়ে ইশকুল-কিশোরের নোটসের খাতার পাতা আসন্ন টেস্টের ভয়ে থরথর করে কাঁপে, বাঁয়ে সেল্সেক্সেকেউটেভের টাই প্রশ্নচিহ্ন হয়ে ভাবতে থাকে আজ ক'টা টার্গেট পূরণ হবে, পেছনে ক্যাশিঞ্চার্জের বহু বছরের বিশ্বাসী ছাতাটা জল ছিটিয়ে হি হি করে হেসে ফেলে 
- সামনে দাঁড়ানো কলেজকন্যার অসতর্ক বন্ধনী লজ্জা পেয়ে প্রজাপতি হয়ে পালাতে চায় তা দেখে। ত্রিশ হতে আরো কয়েক মাস বাকি, ঊণত্রিশেই চিনি ছেড়ে শুগার্ফ্রি ধরেছে আনন্দ, বরাবরের গুড বয় সে। চতুরঙ্গে চিনি ব্যবহার করবে না য়্যাস্প্যার্টেম পেলেট, তাই নিয়ে ভাবনায় পড়ে যায় সে, বিভাজিকা ও জিহ্বার সঠিক অংশীদারিত্ব ছাড়া ইতিহর্ষ একেবারেই অসম্ভব। হঠাৎ কোত্থেকে একটা বাচ্চা ছেলে, যার বুক-পাঁজরের খোঁজ রাখলে ওরা নাওমির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দিত সঙ্গে সঙ্গে, নেস্ক্যাফের কেয়স্কে গিয়ে সটান হাতের পাতাটা বাড়িয়ে দেয়। 

একটু চিনি দাও না গো মাসি!

হিম-ঘুম-ঘুম বিকেলে বনে যেতে যেতে মন কেমন

আচ্ছা - এই বনটা যেন কার?
হুম! মনে পড়েছে এই বার,
ও অবশ্য দেখবে না আমাকে -
কেমন করে বরফ ঢেকে দিচ্ছে গাছগুলোকে।
ধুর! এইখানে থামার কি দরকার?
ভাবছে আমার ছোট্টো ঘোড়া,
তাচ্চেয়ে পা চালিয়ে এসো না তাড়াতাড়ি -
দেখছো না - কাছেপিঠে নেই একটাও খামারবাড়ি।
এভাবে থুম মেরে গেলে কেন বলোতো?
হিম হয়ে যেতে যাও নাকি পাশের হ্রদটার মতো??
বাব্বা! আমি শিওর - এটাই বছরের সবচে' ঠান্ডা সন্দ্যে
টিং টিং! শুনতে পাচ্ছো না আমার ঘন্টি?
এখনো পড়ে আছো ধন্দে??
শোঁ শো করে অই দ্যাখো হাওয়া দিচ্চে ভাইটি!
গুঁড়ি গুঁড়ি বরফে ভিজে যাচ্চি যে।
জেগে থাকে অরণ্য গহিন, 
ঘনিষ্ঠ, সুন্দর - আর যতো প্রতিশ্রুতি এখনো হয়নি পূরণ;
আরো অনেকটা পথ হাঁটা বাকি
আরো কিছু কথা রাখা বাকি।


STOPPING BY WOODS ON A SNOWY EVENING - ROBERT LEE FROST

Friday 13 June, 2008

বাবোস হ্যাঁকো হুক

নেংড়ের কথা

নেংড়ের কথা আবার কি? কোনো কথা নেই! একটা সাড়ে তিন বছরের ছেলে, সারা দিনটা যার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে কেটে যায়, আর রাত্তিরটা ফুটপাথের এক কোণায় - তার আবার কথা কিসের?

নেংড়ে কিচ্ছু জানেনা কি করে জানবে? বললে তো জানবে - কে বলবে? হঠাত এক দিন চোখ খুলে দেখে - আরে এইটা পিরথিবি নাকি?

নেংড়ে যখন জন্মেছিল, তখন খুউব শীত পড়তো কলকাতায়, সেদিন যীশুবাবার চোখের জলও জমে গেছিল

একা একা নেংড়ের ভয় করতো - ভীষণ ভয় এক দিন একটা মাউপুসির পেছনে দৌড়তে দৌড়তে - এটা কোন জায়গা?

দেখে বিশাল একটা বাড়ি, তার মধ্যে সবাই নাচছে, আর কি ধোঁয়া - ভগোমানের বাড়ি

নেংড়ে ভগোমান কথাটা জানে এরম আরো ক'টা কথা সে জানে, পোজাপুতি, পাউ - খিদে পেলে খায় যেদিন পায়না সেদিন কলের জল হিহিহি!!!!!

ভগোমানটা কি ভালো - মেয়ে ভগোমান! তিন তিনটে চোখ!! আর কত্তোগুলো করে ছেলেমেয়ে - নেংড়ের মতো একা নয়

ভগোমানের টানা টানা ভুরু দুটো আর লম্বা চুলটা দেখতে দেখতে নেংড়ে বলে ফেলে, চুপি চুপি, আমার যে কেউ নেই ভগোমান





পুন্নির কথা

পুন্নিটা মুন্নিটা! পাঁচ বছরের মেয়ে - দুষ্টু দুষ্টু দুষ্টু!!

বিষ্টিতে সারা শহর ভেসে গেছিল ও যেদিন পিরথিবিতে এসেছিল ওরও কেউ নেই, তাই একা একাই আকাশ থেকে নেমে আসা জলের ফোঁটাগুলোকে নিয়ে খেলতো আর বলতো, মুত্তো!!!!!

মানে মুক্তো - পুন্নির গোলাপি গাল দুটো হাসিতে ফেটে পড়তো আনন্দে





পুন্নি আর নেংড়ের কথা

সেদিন ভালো খাওয়া হয়েছিল একটা কাকু অনেক অনেক খাবার দিয়ে গেছে - বার্ডে কি?

পেটপুরে খেয়ে নেংড়ে তো ঘুম লাগিয়েছে পরের দিন সকালে - ওমা!

একটা মেয়ে তার চুল ধরে টানছে পালানোর চেষ্টা করতেই মেয়েটা তার ঠ্যাং ধরে টেনে আনলো - এই ভাইয়া!!!!!

আমি পুন্নি!! ভগোমানকে আমার কথা বলেছিলি না?

পুন্নিও ভগোমানকে চেনে? এবার নেংড়ের একটু সাহস হয়

আসলে ভগোমানের তো নানারকম কাজ থাকে, তাই ও পুন্নিকে পাঠিয়ে দিল, পুন্নিরাই ভগোমান আসলে

নেংড়ের ঠিক সেরমই মনে হয়, পুন্নি যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন কপালে চুমু খেয়ে ও বলে, দিদি তুই এত্তো ভালো - ঠিক সেই মেয়ে ভগোমানের মতো

বড়ো আপাকে কুচু কুচু করে দেয় নেংড়ে, মানে নাকে নাকে ঘষে দেয়, খিল খিল করে হাসতে হাসতে।

পুন্নি আর নেংড়ে এখন খুব মজায় আছে বিকেলবেলায় পার্কে বাচ্চাদের বাবোস নিয়ে খেলা করতে দেখে নেংড়েরও শখ হয়, তাই শুনে পুন্নি কোত্থেকে একটা পিচ্চি বাবোস নিয়ে এসেছে, ওদেরটা বড়ো - জালে লাগলে ওল ওল বলতে হয়

একটু ফাটা আর পুঁচকি বাবোসটা, তা হোক, সেইটে দেওয়ালে ছুঁড়ে আবার ফিরে এলে নেংড়ে চেঁচায় - বাবোস হ্যাঁকো হুক!!!!!

Monday 9 June, 2008

নীল পৃথিবী


নীল সূর্য নীল আকাশ নীল চাঁদ নীল গাছ।
নীল মাটি নীল বাতাস নীল সমুদ্র নীল মাছ।।
নীল ফুল নীল ফল নীল পাতা নীল স্বেদ।
নীল চোখ নীল চুল নীল চুম্বন নীল ক্লেদ।।
নীল পুরুষ নীল বীর্য নীল নারী নীল চেতনা।
নীল যৌবন নীল আলিঙ্গন নীল কামনা নীল বাসনা।।
নীল বিবাহ নীল বিচ্ছেদ নীল জীবন নীল মরণ।
নীল আমি নীল তুমি নীল কার্য নীল কারণ।।





৯৭ - ০০

Saturday 7 June, 2008

আকাশগঙ্গা


আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আমায় চিনতে তুমি পারো?
দু'টি চোখের নীরব ব্যথা পড়তে তুমি পারো?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, চুপ কেন তুমি আজ?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, কিসের এতো লাজ?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, ভাবছো এতো কি?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আমায় মনে পড়ে কি?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আকাশে থাকো যে কেন?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, এখানে আসো না কেন?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, দারুণ ভালো থেকো!
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আবার আমার কাছে এসো।





৯৭ - ০০

Wednesday 4 June, 2008

পুজো

পুজো মানে কালো মেঘের
হঠাৎ চলে যাওয়া,

পুজো মানে আকাশটাতে
নীলের ছোঁয়া লাগা


পুজো মানে শিউলি ফুলের

গন্ধে ভরা সকাল,

পুজো মানে সোনালী রোদের

স্পর্শে ভরা বিকাল


পুজো মানে রাশি রাশি

সারি সারি কাশফুলের দোলা,

পুজো মানে সুখের স্মৃতি দিয়ে

মনের দু:খগুলো ভোলা


পুজো মানে নতুন জামা

নতুন জুতো পরা,

পুজো মানে প্রথম প্রেম

প্রথম শাড়ি পরা


পুজো মানে গভীর রাত

তবু প্রচুর লোকজন,

আমার হাতে তোমার হাতের

নীরব সমর্পন -

আমার প্রথম...প্রথম...চুম্বন


পুজো মানে দারুণ ব্যাপার

খাওয়া যে জব্বর,

পুজো মানে প্যান্ডেলেতে
রাত্রি থেকে ভোর


পুজো মানে দিন গোণা

ঠাকুর আসবে কতোক্ষণ,

পুজো মানে মায়ের বিদায়

ঠাকুর যাবে কতোক্ষণ






৯৭ - ০০

Tuesday 3 June, 2008

বিবর্তন


যে সূর্য আজ আকাশের বুকে উঠেছে,
কালও সে উঠবে
যে নদী আজ সাগরের সাথে মিশে খিলখিলিয়ে হেসেছে,
কালও সে হাসবে
যে পাখি প্রথম-প্রণয়-সুরে আজ প্রভাতে গেয়েছে,
কালও সে গাইবে
কিন্তু যে ফুল আজ ফুটেছে নিভৃত নির্জনে,
কাল সে অশ্রু হয়ে ঝরিবে গোপনে





৯৭ - ০০

Saturday 24 May, 2008

ঈশ্বর ও ছোটোলোক


কি রে ছোঁড়া! কি খবর তোর?
সে রাতে - মুঠোফোনে এসেছিল ইশ্বর।
ওরা মানুষ, আলগোছে ভালোবাসে, ভুলে যায় পুরনো খবর।
ইতিহাস খুঁড়ি, চুপিসারে, আমি ছোটোলোক।
মিথ্যেবাসো, ক্ষতি নেই, বলে যেও হলে পরে জ্বর -
ওহে পর্দাপ্রেমী ইশ্বর! আমি জাত ছোটোলোক, নই অবুঝ বালক।
ঠিক ঠিক, কেঁপে উঠে ছিল বটে বুক
যবে ভুল করে ছুঁয়ে ছিলাম ভগবানেরই চিবুক।
আমার হাসির একেবারে সামনে ও তোমার কান্নার অনেকটা পেছনে
জুড়ে ছিল মেঘলা আকাশ, নাকি মানবীর মুখ, সোহাগ-প্রত্যাশী? নকাব-নির্জনে।
আরো এক বার অভিনন্দন, তোমার জন্যে, শুধু তোমারই জন্যে রইল সিংহাসন
আর এই ক্ষণিকের বিনোদন, এই সব কাল-হবে-অকেজো স্বর্গ-বিক্রয়,
এখন প্রি-চৈত্র-সেল, নিখুঁতভাবে সাজিয়েছো প্রতারণা-মেহফিল।
তোমার অই নিকোনো উঠোন, ভুলে যাবে অনাহারী রোদ
শাপলার কাছে নেই শতদলের কোনো অভিযোগ।
ঢাকো যতো পারো অভিনয় দিয়ে একাবোকা অভিমান - ভীষণ
ইশ্বর-উপসর্গ তোমার, কথা দিলাম, থাকিবে গোপন -
আহ-মন্দ-নগরে, প্রযুক্তি-খোঁয়াড়ে, পড়ে থাকি - কথা দিয়ে কথা রাখি
আমি ভালো ছোটোলোক।

শিবানীর শেষ চিঠি


মা, ও মা! ও খুব ভালো
তুমি কি তা জানো?
আমার কোনো কথায় না -
ও করে না কখনো।

মা, ও মা! তুমি এটা কি শুনেছো?
অনেক কথার ভিড়ে -
জন্মদিনে ও দিয়েছে
মুসুর-ডালী হীরে।

মা, ও মা! তুমি এই কথাটা বলো
রাতের পর রাত কার চোখটি ছলোছলো?
আর নির্বেদ বাতাসে হাজারো দীর্ঘশ্বাস,
কেন মিশে যায় কার উদ্বেল বুকখানি চিরে।





৯৭ - ০০

রজনী এখনো তরুণী


সানায়ের সুর নির্মমে ঢাকে এক রূপসীর ক্রন্দন
অশ্রুসিক্ত কপোল, ম্লান মুখের চন্দন।
যৌবন-ধূপ হবে নি:শেষ
সকল সুরভি হারিয়ে যাবে,
ভালোবাসার ক্ষুদ্র শিখা এখনি যাবে যে নিভে।
সকালবেলার ফোটা ফুলটি
বিকেলেই যাবে ঝরে,
আনুষ্ঠানিক কিছু মণ্ত্র! তারপর?
ধণিক তাকে নিয়ে যাবে ধর্ষণের তরে।





৯৭ - ০০

বইমেলা টুকে


রূপার সামনে অপরূপা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল
এই জিন্স যুগে সুতির শোভনতায়,
বুঝি বা কিছু বলতে চাইছিল -
সামান্য ক্লান্ত চুলের আধ-আড়ালে থাকা জুঁয়ের ভাষায়!
( প্রিয় পাঠক-পাঠিকা : সে কিন্তু সলেট্যারে রেপ্যার নয়, আর
আমিও য়্যুলেয়মের মতো কোনো প্রথিতযশা কবি নই, তাই
এ' কবিতাটা ইচ্ছে করলেই আপনারা স্বচ্ছন্দেই বাদ দিতে পারেন। )
আজকাল সভ্যতার যে সব প্রহসন বেরিয়েছে
কোনোটা গ্লসে - কোনোটা ম্যাট - কোনোটা বা এক্সপ্রেস ফেনেশ;
সে সব বিদেশি জৌলুষে নিজেকে মূল্যহীন করে তোলেনি সে
অমূল্যই ছিল - কপালের ওপরে ছোট্টো একটা, সাদা, চন্দনবৃত্তের ভূষণালোকে।
পাখা মেলে পালিয়ে যাওয়া ভাবনাগুলোকে ধরতে চাইছিল;
টিকেটের ক্যাউন্টর-ফয়েলটা আনমনে ছিঁড়তে ছিঁড়তে।
এই প্রথম বার নিজেকে বড়ো অসহায় মনে হলো।
ইংলেশ মেডিয়মে শুধু হায় বলতেই শেখায়
কিন্তু সে সব তো ঝাঁ-চকচকে মেয়েদের জন্যে;
সে কথা অই - পৃথিবীর, প্রাণের, মাটির গন্ধ লেগে থাকা মেয়েটিকে বললে
আমি নিজেই তো ফিকে হয়ে যাবো!
তাই সম্মানিত দূরত্বটুকু বজায় রেখেই শুরু হলো লুকোচুরি খেলা
কখনো মমার্তে, কখনো এন বি টি, কখনো বা আনন্দে -
তবুও মাঝে মাঝে দিশেহারা;
সুনীলদার জন্যে আজ প্রশ্নের ঢল নেমেছে গিল্ড-অফেসের সামনেই - প্রশ্নাতীতভাবেই!
তখনই ব্যথিত হয়ে উঠলো কলকাতার আকাশ
যে ব্যথার ছোঁয়া এক পলকের জন্যে দেখেছিলাম নিষ্পলকে সেই মেয়েটির চোখে;
পৃথিবীর না হলেও আমাদের চারপাশের,
এই পৃথিবীটার জন্যেই ছিল ব্যথাভরা ভালোবাসা -
আপনাদের জন্যে, এই সমাজের জন্যে, হয়তো বা নিজের অস্তিত্বের প্রশ্নে বিপণ্ণ
এই ছেলেটির জন্যেও।
তারপরেই অভিমানভরে বৃষ্টি হয়ে মিলিয়ে গেলো সে সায়াহ্নের অন্তরালে।





৯৭ - ০০

স্বপ্ন-উজানের কবিতা


এখন আর স্বপ্ন দেখি না!
মেয়ের হ্যান'ব্যাগে ওষুধের খালি প্যাক দেখে বুঝি
এখন ও স্বপ্ন দেখতে শিখছে, সতর্কভাবে -
সচেতন কিছু স্বপ্ন।
এখন আর স্বপ্ন দেখি না!
শিশিরভেজা ঘাসের ওপর দিয়ে
খালি পায়ে হাঁটার স্বপ্ন।
এখন আর স্বপ্ন দেখি না!
নারী আজ নদী হতে ভুলে গিয়ে
মুখ ফিরিয়েছে অর্ধেক আকাশের দিকে।
কেবল, যখন চায়ের দোকানের ছেলে
হাঁ করে তাকিয়ে থাকে ভোরের শিশু-সূর্যের দিকে -
তখন, চুপি চুপি বলি, ওটা স্বপ্ন নয় রে বোকা ছেলে!





৯৭ - ০০

অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকার


আচ্ছা - আপনি প্রেম করেছেন কখনো?
কেসেট-রেকর্ড্যার অন করে
আমায় সবুজ সালোয়ার প্রশ্ন করে,
পেশাদারী হাসি হেসে।
আমিও একই রকমভাবে হাসি। প্রেম!
আচ্ছা দিদিভাই, বলতে পারেন -
বুলেটের শিষ বিঁধে
মরে যে মৈথুন-ক্লান্ত হংস মিথুন,
তারা কি করেছিল - প্রেম?
মন্দির-প্রাচীরে আজ শুধু ইতিহাস
হয়ে যাওয়া য়্যাজটেক-সূর্যসেবিকা,
সেও বুঝি করেছিল - প্রেম?
ব্ল্যাক-হোলপানে ছুটে চলা
বিষণ্ন আলোর মিছিল,
তারাও তো করেছিল - প্রেম?
ন্যাপ্যাম বোমা আর এজেন্ট-অরেঞ্জে
মরে যে মানুষ,
সেও বুকে নিয়ে মরেছিল - প্রেম!





মুদ্রিত





৯৭ - ০০

নারী


নারী! রহস্যময়ী!!
কেন আপন চিকুর-চিক্কণ ঘনকৃষ্ণতায়
কৃষ্ণতারা-প্রাণ সংহত করে;
রক্তপলাশ অধর-অবকাশে
অগ্নিবর্ষী চুম্বন, দিলে উপহার।
আর, চপল নয়নকোণে
বিরল-বিজুরী চমকাল বার বার।
কেন উদ্ভাসিত শ্বেতকম্বু-স্তন
মেলে ধরে, শোনালে উত্তাল ঊর্মি-উচ্ছলন।
পুঞ্জিত নীহারিকা-নাভির নীরব বিস্ফোরণে
অপার্থিব নক্ষত্র আবাহনে;
অনন্ত বার্তা পাঠালে সুদূর মহাকাশে, ধ্রুবতারার দেশে।
তোমার অই ক্ষীণ কটি, কোনো এক ক্ষণে
আমিই কি ধরেছিলাম জড়িয়ে?
মৃণাল বাহুশেষে বিকশিত চম্পকাঙ্গুলী থেকে;
হাম্বুরাবি-যুগে, আকন্ঠ, রক্তিম-তরমুজ-মদ পানে -
আশ্চর্য উষ্ণতা-নেশা ছড়িয়েছিল শিরায় শিরায়।
তুমি গর্বিত নিতম্ব দোলায়, কেন, বলো কেন?
করলে এই মনকে উতলা;
আর উদ্ধত ঊরু-উপত্যকা ঘিরে থাকা আদিম রহস্যাবরণ
তারকা-খচিত রাত্রি অন্তরালে করলে নিগূঢ়তায় উন্মোচন।
নারী! পৃথিবীর বুক ছেঁচে গড়ে তোলা নারী!!





৯৭ - ০০

নতুন বই


সারা শরীরে যৌবনের গন্ধ মেখে তুমি এলে,
তোমারই জন্মের রজত-জয়ন্তীতে;
পৃথিবীর সমস্ত রহস্যকে নিজের শরীরের
প্রতিটি উপত্যকায় সঞ্চিত করে।
তোমার মলাট খুলে আমি পড়লাম,
সুদূর মহাবিশ্বের অচেনা অজানা সুন্দরী নেব্যুল্যাদের কথা;
রাতের গোপন সার্থক অন্ধকারে।
আর পূর্ণিমা চাঁদ জাগে পয়োধর-য়্যারেট প্রান্তরে!
তোমার প্রতি অঙ্গ প্রতিটি বিভঙ্গ আমায় শেখালো
সেক্সের সহজ পাঠ;
সিক্সটে-নায়ন পজেশ্নে হাতেখড়ি হলো।
( উ: মা মনে পড়ে না, সেই সব পড়া তুমি দেখেছো কি না, আমাদের চুমকুড়ি শুনেছো কি না - প্লিজ মা লিপস্টিক-স্টেন দেখে রাগ করো না! )
স্যুপায়ন-শরীরের প্রতিটি স্বতণ্ত্র অনুভবে, কান পেতে শুনলাম, পৃথিবীর গান।
আর প্রাণ ভরে নিলাম, য়্যাম্যাজনিয়্যান রেন্ফরেস্টের আঁধার-লাগা চুলের, সোঁদা লাজুক গন্ধে।
তোমার শরীরের প্রতিটি পাতাই পড়লাম, অনন্ত বার, অনন্ত কাল ধরে - কখনো সোজা কখনো বা উল্টো করে।
( উফ! গ্যাল্যাক্সে-নাভি-গোলকধাঁধাঁয় ক্লান্ত!!
তবু জটিলতা-পেউবেক-পথ বেয়ে নেমে আসি ঊরু-ক্রেভ্যাসে। )
আর অধিকারের ছাপ এঁকে দিই তোমার অনাঘ্রাত অধরে।
( বার বার বললাম, তবু দুল দু'টো খোলোনি, উ: - আমার গাল গেল চিরে! )
আয়্যাম সরে ড্যার্লেন, কিন্তু মেল শভেনেজ্মের মধু-স্বাদ, তোমার মাও তো পেয়েছিলেন এক দিন!!
( কই তখন তো তিনি বলেননি, য়্যু আর গয়েন টু ফার, যাও আমি খেলবো না আর! )
তারপর, স্বল্প একটু বিশ্রাম, আদর-খেলা-এন্টেরাপ্ট্যাস
( এটা অবশ্য আমি আদর করে বলি! আর কয়ট্যাস-এন্টেরাপ্ট্যাস বলে বেরসিক ডাক্তারে - )
কারণ, আমি আবার পড়বো তোমায়, পরশু - শনিবারে।





৯৭ - ০০

নব প্রাণ সৃষ্টির পুণ্যলগ্নে


নতুন বিয়ের নেশা ভালোভাবে উপভোগ করার পরে
পুরুষ আর প্রকৃতি, হায়ম্ন-দর্প পুরোপুরি চূর্ণ হওয়ার পরে
ঘরের সঙ্কেতবাহী অন্ধকারে নগ্নতা-নামতা পড়বে তারা -
এবার আর খেলা খেলা না, এক ঘেঁয়ে লাগছে ভীষণ!
একটা সত্যিকারের খেলার পুতুল চাই-ই চাই।
আচ্ছা বেশ!
কিন্তু আজ না, কাল, কাল পূর্ণিমা - আর পূর্ণিমা তিথিতে
ওসব, বুঝতেই পারছো, দেবগণ হলেও হতে পারে।
কুট্টনীমতের কথাগুলো কি আর মিথ্যে হতে পারে!
কামানের মতো সগৌরবে উঁচিয়ে থাকা দীর্ঘ পুষ্ট পীইন্যস -
বার্জম্যানের ছবিতে ঠিক যেমনটি আছে?
তারপর - ভাল্ভা চুম্বনে ক্লান্ত
কস্মেক বেগে সেখান থেকে ছুটে যাবে সাহসী কিছু স্পার্ম,
সোজা গিয়ে সেইফল্যান্ড করবে বিহ্বল কোনো ভ্যজ্যান্যায়।
তারপর? কেমেক্ল শক-ওয়েইভ, ফেউশ্ন-অভিষেক
অবশেষে নিষ্প্রাণ প্রাণের জন্ম হবে।
শুরু হবে ফেল্যপেয়ন-পথচলা!
গড়গড় করে এগিয়ে যাবে বংশের বিজয়রথ।
আর বাৎসায়নের বয়ের মলাটে ধুলো জমবে না কোনো দিন!





৯৭ - ০০

অরুণ-স্মৃতি


মনে পড়ে তার চোখটি বেঁধে,
সেই সেদিনের কানামাছি খেলা;
এক যে কিশোর আর কিশোরী,
খেলত বসে পাশাপাশি-
পুতুলের বিয়ে-বিয়ে খেলা।

শুকনো পাতা উড়ত যখন,
ধুলোর সাথে কালবৈশাখি ঝড়ে;
এক ছুটে সেই বোস-বাগানে,
পালা করে এই দুজনে;
খুঁজত তখন কোথায়-
গাছের আমটি আছে পড়ে।

সন্ধ্যাবেলায় স্কুলের শেষে,
ফিরত যখন ষষ্ঠীতলার আঁধারভরা পথে;
একটি হাত আলতো করে-
জড়িয়ে যেত অন্যটির সাথে।

পুকুরপাড়ে আমি যখন,
মাছ ধরতাম সিঁড়ির ধাপে বসে;
মাছগুলো সব পালিয়ে যেত,
টোপটা খেয়ে কখন!
মিষ্টি হাসি খিলখিলিয়ে-
আসত ভেসে ঝোপের পাশটি থেকে।

ষষ্ঠী থেকে নবমী-
বোস-বাগানের পাশের মাঠে,
মেলা বসত চার দিন;
সবকিছু যে ভুলে যেতাম-
মন হত রঙীন।

মাটির ভাঁড়ে লুকিয়ে রাখা,
গোপন সম্পদের আশ্বাস;
বারে বারে গুনি-
তবুও সেই বারো টাকা পঞ্চাশ!

নাগরদোলা, তেলেভাজা, ভেল্কিবাজি
আর টুনি বাল্বের বাহার,
ছোট্ট একটা আংটি আমি কিনে-
পরিয়েছিলাম আঙুলেতে তার।

অবুঝ মন কি বুঝেছিল,
অবাক হয়ে তাকিয়েছিল;
আমার মুখের দিকে-
আংটিখানি মুখের কাছে এনে,
ভালোবেসে অধর-পরশ তাকে-
সলাজ হেসে দিয়েছিল উপহার।

একলা বসে থাকি যখন,
সকাল থেকেই দেখা নেইকো তার;
অভিমানে মনটি আমার ভার!
বাজত তখন কানের কাছে,
কাচের চুড়ি রিনিঝিনি;
গহন চুলের নরম শাসন-
মেনে নিতাম তার।

এন্ট্রান্সে বৃত্তি পাওয়ার পরে;
মামার সাথে কলকাতাতে,
গেলাম আমি চলে;
রেলগাড়িতে যেতে যেতে মনে,
আমার পড়ছিল ক্ষণে ক্ষণে;
কান্নাভেজা একটি মেয়ের মুখ,
টানা টানা চোখ দুটি যার-
আজ ভিজেছে জলে।

এমনি করেই এই জীবনে,
অনেক বছর অবহেলে;
আমার এ মন হারিয়ে ফেলে!
যে মন সেদিন মেতেছিল,
ঘাসের বুকে লুকিয়ে থাকা-
কোন সে সুখী ফুলেরই সুবাসে;
আজ সে মন ফুরিয়ে গেছে-
এই পৃথিবীর বিষাক্ত নি:শ্বাসে।

এই পৃথিবীর এপারেতে,
আজও তুমি জেগে আছো?
আশায় বেঁধে বুক-
ওপারেতে একলা আমি,
হারিয়ে গেছি অনেক লোকের ভিড়ে;
তাই আজকে আমি চুপ!





৯৭ - ০০

স্বপন-জমিনে খসড়া-আবাদ


আমাদের এমন একটি শব্দ বাছতে হবে যা ব্লগিঙের মূল মুডটিকে রেফ্লেক্ট করবে। অর্থাত ভাবানুবাদ-মর্মানুবাদ টায়প। তাচ্চেয়েও বড়ো কথা হলো, শুধু মাত্র তথাকথিত শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রান্তজ থেকে প্রথিতযশা, সমাজের সকল শ্রেণীর দ্বারা স্বীকরণ সাধিত হবে - চাই এমনই এক শব্দসখ্যতার। ওসব অপরবাস্তব-ফাস্তব সেন্থেটেক কয়নেজ একেবারেই পাব্লিক খাইবে না! প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় অদূর ভবিষ্যতে চাষার ছেলে ব্লগাইতে ব্লগাইতে উহাই প্রথম প্রশ্ন করিবে যে অপরবাস্তব খায় না মাথায় মাখে?

নেট, ওয়েব, কম্প্যুটর - এই সব শব্দের আজো কোনো লাগসই বাংলা বেরোয়নি। এই বার দেখো, ব্লগ লোকে পিসিতে পড়ে, ঠিক কি না? তো কম্পু খুলে যখন কিছু লেখালিখি করা হয়, সেই ফায়লটাকে আমাদের লায়নের ভাষায় বলি সফট কপি, আর যখন প্রিন্ট নেই তখন হার্ড কপি বেইরে আসে।

প্রথমে ব্লগের বাংলা হিসেবে দিস্তেখাতা কথাটার ওপর হভ্যার করছিলুম। ছোটোবেলায় একটা রেচ্যুয়্যাল ছিল - কয়েক দিস্তা লুজ কাগজ কিনে সেইটে সেলাই করে তাতে পড়ালিখা চালাতে হতো। দিস্তেখাতা কথাটা এই কোমল-কোমল সফট-কপি ভাবটা অনেকটাই কনট করে।

তারপরে খসড়াখাতা কথাটি মনে এল। রে যে ভাবে আপাদমস্তক বাঙালী হয়েও একান্তই আন্তর্জাতিক - এই খসড়াখাতা শব্দটিও ঠিক তাই। তার কারণ আছে। এই সোয়াই বাংলা-ব্লগিন মঞ্চেই খসড়া রচনা হয়েছে, প্রাপ্তির মতো নিষ্পাপ ফুল যাতে বৃন্তচ্যুত না হয় কোনো ভাবেই, পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ভ্যাল্রিকে তাঁর হৃত সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার।

ধুলোমাখা চাঁদের কাছে যেতে বা গন্দম ছিঁড়ে নিতে, ঠিক যতটা পথ হেঁটে যেতে হয়, সেই ফ্ল্যাগফ যে এখান থেকেই হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। আমরা খসড়া লিখি, কারণ আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি, এক সুন্দর ভবিষ্যতের - এই ব্লগিন যেন আমাদের সেই স্বপ্নপূরণের স্যুডোকোড।

কতো শত স্বপ্নের খসড়া যে লায়ভজর্নল থেকে ওয়র্ডপ্রেসে রোজ রোজ রচনা হয়ে চলেছে তা কে জানে। আর যেদিন এই সবগুলো ফাংশ্ন মেনের মধ্যে কল করা হবে, ঠিক সেই দিনটা দেখার আশায় আশায় বেঁচে আছি আমরা সবাই, নয়-এগারো ভুলে সামনের দিকে তাকিয়ে আছি বুক ভরা প্রত্যাশায় - টাকার গাছটা গুঁড়িশুদ্ধু মরে যাবে আর সেই কোথায়-হারিয়ে-যাওয়া ফুলগুলো ফিরে আসবে আবার।

হে ব্লগার, থুড়ি, খসড়ালেখক - শুভ স্বপ্ন দেখা!

মৈথু মিঞা অর্থাৎ আমি, মিস মানে একটি ( সুন্দরী ) কুমারী, ও তুমি ওরফে জনৈক খলনায়ক - এই তিনজনের গল্প


আই মিস য়্যু ফ্রেজটিকে নিয়ে দেখলুম বেশ টানাহ্যাঁচড়া করছেন অনেকে - এখনো করেই যাচ্ছেন।

ভূমিকা না করে সরাসরি প্রসংগে চলে যাচ্ছি - প্রতিটি ভাষার উদ্দেশ্য হল, মনের ভাবকে মুখোশ পরিয়ে নয়, আন্তরিকতার আমণ্ত্রণ জানিয়ে অপরের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

এবং এই কাজ করতে সে যখনই ব্যর্থ হবে - সময়ের অমোঘ আদেশে হারিয়ে যাবে এই পৃথিবী থেকে চিরতরে।

আলোচ্য ইংরিজি বাক্যটি যখনই আমরা কাউকে বলি, আমাদের উদ্দেশ্য থাকে তার অভাববোধের কথা তাকেই যেন সুস্পষ্টভাবে জানাতে পারি, আমাদের জীবনে-মননে তার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্বের কথা যেন সাবলীলে লিখে দিতে পারে তাকে বলা আমাদের প্রতিটি শব্দই।

অতএব, দরকার এমন এক বাংলা প্রতিশব্দ-জোটের, যা একেবারেই আভিধানিক নয় - বরঞ্চ সার্বজনীনসিদ্ধতায় প্রায়োগিক।

এমন এক শব্দসখ্যতা, যা আমরা রোজকার জীবনে ব্যবহার করতে পারব, সমস্ত রকম সম্পর্ক ও পরিচয়ের ঊর্ধে হবে তা।

অক্লেশে যেমন তা বলতে পারবো স্বল্পপরিচিত কোনো মিতাকে, তেমনি বহুদিনের পুরনো সম্পর্ককেও নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করবে সেই কথা কটি।

মেয়ে যেমন বলতে পারবে বাবাকে, তেমনি প্রিয়া বলতে পারবে তার প্রাণের বঁধুকে, সবাই সবাইকে বলতে পারবে।

খুউব জানতে ইচ্ছে করছে বুঝি - এখনো বলতে পারলেন নাতো?

চোখটি বুজে, নিজের মনকে একবার সত্যি করে জিজ্ঞেস করলেই, সে কিন্তু বলে উঠত সব বাধা ভুলে -





আপনার ( তোমার, তোর ) কথা সেদিন ( তখন,এখন ) খুউব ( বড্ডো ) মনে পড়ছিল ( হচ্ছে, হচ্ছিল, পড়ছিল ) ( রে ) আমার।

মুখোশের আড়ালে


ইদানিং ভার্চুয়াল চরিত্র নিয়ে বড়ই জল ঘোলা হচ্ছে এই পদ্মদীঘিতে। এই জ্বালাময়ী আইডিয়াটি যার ঊর্বর মস্তিস্ক থেকে বের হয়েছে, তাকে আদর করে শালা বলতে পারছি না, সে পথ বন্ধ - কারণটা বলছি একটু পরে।

যাই হোক, সবাইকে প্রথমেই একটা কথা বলে রাখি, যাকে উদ্দেশ্য করে অভিনন্দন - আপনার জন্যই রইল সিংহাসন শীর্ষক লেখাটি লিখেছিলাম - আজকে তাঁর ভার্চুয়াল চরিত্র বিশ্লেষণের কোনোরকম ইচ্ছেই আমার নেই।

কারণ, শুধু তাঁর নয়, কারো কোনোরকম অ্যানালিসিসের যোগ্যতাই আমার নেই।

আজকের লেখা মৈথুনানন্দ নামক জনৈক বিকৃতমস্তিষ্ক নবস্বাক্ষরের কিছু একান্ত অনুভূতির, খেয়ালী খটকার খসড়া মাত্র, পড়া হয়ে গেলে গোল্লা পাকিয়ে বাস্কেটে ফেলে দেবেন দয়া করে।





হঠাতই কাল রাত্রে একটা বিষম খটকা লাগল - মনে হল রাগ ইমনের ঐ চোখ দুইটি যেন বড়ই চেনা।

ক্লিসে বলা চলবে না কিন্তু - মনে রাখবেন আপনারা একজন সদ্যস্বাক্ষরের মুখ থেকে কথা শুনছেন।

মনে হল এই ভদ্রমহিলাকে আরও কোথায় কোথায় যেন দেখেছি, এবং তা যদি শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়, তবে কি হবে ভাবতে ভাবতে বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম।

সেকেন্ড-লাইফ নামের অতীব জনপ্রিয় গেমটির কথা মনে পড়ে গেল। আসলে এখানে আমরা তো সবাই একেকটা অল্টার্নেট রিয়্যালিটি, এবং দুটি ভিন্ন জাগতিক অর-চরিত্রকে মেলাই বলুন তো কোন সাহসে, কবি তো বলেই খালাস - মেলাবেন তিনি মেলাবেন।

আর তারা যদি ভুল করেও একে অপরের কাছে চলে আসে, তবে ভয়ংকর কিছু ঘটবে নাতো, বস্তু ও পরাবস্তুর সংঘর্ষের মতো?

শুরু করে দিলাম একই সংগে বিতর্ক ও জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই ব্যক্তিটি সম্পর্কে তত্ব-তালাশ, নিন্দুকেরা যাকে আদর করে বলেন রাগি মন।

এই অপারেশন রাগ ইমন করতে গিয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর তো পেলামই - তবে তার থেকেও বড়ো একটা জিনিষ হস্তগত হল।

বাংলা ভাষায় যাকে বলে সম্বিত।

বুঝতে পারলেন না? রাজা তোমার কাপড় কোথায়...একথাটা শোনার পরে সে যা ফিরে পেয়েছিল...ঠিক তাই।

আচ্ছা, কেউ বলতে পারেন, কেন এই স্ববিরোধিতার বিষপানে সবার এত আসক্তি?

দিন কতক আগে ওনাকে নিয়ে যে লেখাটা ( অভিনন্দন... ) লিখে ফেললাম - তার সত্যিই কি কোনো প্রয়োজন ছিল? এখানে কি করতে এসেছি আমি, টপ রেটেড লেখা লিখতে, নাকি মেরিট লিস্টে নাম তুলতে?

উনি আমাকে যে কথা বলেছিলেন বলে ঐ লেখাটা ফট করে ল্যাপটপ খুলে লিখে ফেলেছিলুম, সে তো ছিল আসলে এক দিনের রাজা হওয়ার প্রস্তাবেরই মত, এই কাঙালের তো আর কোনো প্রিয়জন নেই যে তাকে বোন কি দিদির অধিকারে একটু বকুনি দেবে কোনোদিন।

যাই হোক, ওনাকে যা বলেছি, আমি জানি ওনার মতো উদারহৃদয়া মেয়ে তা মনে নেননি - অভিমানের কথা, মুখের কথা, এসব কথা কি কেউ কখনো মনে নেয়?

এই ওনার সম্বন্ধে খোঁজ-খবর করতে করতে আমি কিন্তু ওনার অনেকটা কাছে চলে এসেছি - যে উদ্দেশ্যে আমার এখানে আসা।

সবাই সবার মনের কাছাকাছি আসব, সুখ-দু:খ হাসি-কান্না থেকে আরম্ভ করে জীবনের রূপ-রস-শব্দ-স্পর্শ-গন্ধ, সব কিছুই ভাগ করে নেবো একসাথে - বাস্তবতার অপূর্ণতা সক্কলে প্রাণ ভরে মিটিয়ে নেব এখানে এসে।

আমি ওনার কোনো কবিতা পড়িনি, আমি কারোরই কোনো কবিতা পড়িনি, কারণ একবার কবিতা পড়তে আরম্ভ করলে এক মৃত ব্যক্তির জেগে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে বিস্তর।

মনে পড়ছে না বুঝি, সেই সে সেই ফ্রিতে-কবি-হয়ে-যাওয়া ছেলেটার কথা বলেছিলাম না একদিন, চয়নিকা বলে একটি মেয়ে যার সাথে ইশকুলে পড়ত - সেই পাগলাটার কথা বলছি।

আর মড়া যদি একবার জেগে যায়, তাহলে খুউব বিচ্ছিরি ব্যাপার হবে, ফারাওদের নিয়ে লেখা টিনটিন কমিক্সের সেই মমির মতো - হাবুভাইয়ের ভূত ঠিক এক্ষুণি আপনার ঘাড়ে চাপলে যে অবস্থা হবে।

ব্যথাও লাগতে পারে, হিমু দাদাবাবু যদি কখনো সুন্দরী বালিকাদের বদলে ভুল করে আপনাকে কামড়ে দেয়, তখন যতটা লাগবে - ঠিক ততটাই।

অতএব আমরা আবার রাগ ইমনের কাছে ফিরে যাই। ওনার সম্পর্কে একটা সার্বজনীন ধারণা চালু আছে, যে উনি নিজের লেখার ব্যাপারে খুব সংবেদী ও ডিফেন্সিভ, এবং অতি অবশ্যই আইকনক্ল্যাস্ট - কিন্তু শুধু এটুকুই কি সব?

কোনটা তাঁর মুখোশ - আর কোনটিই বা তাঁর মুখ?

উনি কি সেই রাশিয়ান ডল মারুস্কা...পুতুলের মধ্যে পুতুল...আবার তার ভেতরে আরো একটা পুতুল!

ওর এই অতলস্পর্শী মনের তল পাবে কে?

যে মন তাকে নিষেধ করে বীক্ষণ নামের বাংলা ই-জিনে লেখা দিয়েও লেখক-পরিচিতিতে সবাক হতে।

আমি খুব ভালো করেই জানি, যারা ওর সাদা-কালো পাসপোর্ট ছবিটি প্রথমবার দেখবেন, তাঁরা আমারই মতো অসীম বিস্ময়ে চিতকার করে উঠবেন - এও কি সম্ভব?

এই শান্তশিষ্ট সাধারণ মুখশ্রীর মেয়েটার মধ্যে এত আগুন?

আরে এই মেয়েটাকে তো রোজই দেখছি একবার করে, কখনো তো খেয়াল করিনি, যে এ-ই আমিই সেই মেয়ের মেয়ে - এক যে আছে কন্যার সেই কন্যা।

যে আইকনক্ল্যাস্টের চেয়েও বেশি কিছু।

এ যেন রুপকথার সেই ঘুঁটেকুড়ুনির গল্প - যে রোজ রাতে ঠিক তিনবার হাততালি দিলেই এক পরমাসুন্দরী রাজকন্যা হয়ে যেতো।

বয়সের হিসেব করে দেখলুম উনি আমার চেয়ে এক-আধ বছরের ছোটো কি বড়ো হবেন।

খুউব জানতে ইচ্ছে হল যে এই আপাত-রুক্ষ নকাবটির পেছনে আসলে কি আছে।

একটা বাচ্চা মেয়েকে দেখতে পেলাম, যার মনটা এক্কেবারে সাদা, সাদা জুঁইয়ের মতো অনাবিল ও পবিত্র - মুক্তোর মতো ঝকঝকে।

আর মুক্তোর প্রকৃত সমঝদার এই পৃথিবীতে হাতে গোণা, তাই তাকে প্রকৃতির নির্দেশ মেনে ঝিনুকের শক্ত খোলকের মধ্যে থাকতে হয়, সেটা তার দোষ নয় - আমাদের দৈন্য।

রাগ ইমন নামের মেয়েটি এতটাই ইনোসেন্ট যে, তার লেখা নিয়ে কেউ কিছু বললেই, ঠিক একটা বাচ্চা মেয়ের মতোই পজেসিভ হয়ে ওঠে সে - এই তুমি আমার খেলনায় হাত দিয়েছো কেন!

এই মেয়েটি যে বিশাল কর্মকান্ডের কান্ডারী, তার সবটা না হলেও কিছুটা জানতে পেরেছি, জানতে পেরেছি ও বাচচাদের ও অন্যান্যদের জন্যে কি কি করছে।

বইমেলায় দেওয়া ওর অটোগ্র্যাফ দেখে, সাবলীল হস্তাক্ষর থেকে বুঝতে পেরেছি ওর সাদা মনে কোনো কাদা নেই, তা অকপটভাবে কপটতাহীন।

ওর ডাক নামটিও বেশ মজার - আমাদের বাড়ির রঙের মতো!





প্রিয় রাগ ইমন!

তোমায় কোনো শুভেচ্ছা জানাচ্ছি না, জানি যে এসবের তোমার কোনো প্রয়োজন নেই, কারো কোনো শুভেচ্ছা ছাড়াই তুমি এতটা পথ হেঁটে এসেছো - লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারবে তুমি স্বমহিমায়।

কাউকে কিছু দেওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই আমার নেই - বরঞ্চ তোমাদের কাছ থেকে তা পেলেই হয়ত জীবনের হেরে যাওয়া খেলাটায় জিতলেও জিততে পারি।

শুধু একটা অনুরোধই করছি তোমায়; ভাই বলে মেনে নেবে এ কামনা করিনা, দাদা বলে স্বীকার করবে এ আব্দার রাখিনা, বন্ধু বলে পাশে হাঁটার সুযোগ দেবে এ স্বপ্ন দেখিনা - এবার থেকে অন্তত: নীরব অনুসরণের অনুমতিটুকু দেবে তো আমায়?

লুচ্চরিত্রের কাছে ছলনা ছাড়া আর কিছু আশা করো না


পায়ে একটু হাত দিতে দেবে?
উঁহু - প্রণাম করবো না,
ময়নামতি-নুপূর পরাবো
জমানো খুচরোয় রথের মেলায় কেনা।
কোলে একটু শুতে দেবে?
ঘুমোবো না তো!
সুষম প্রত্যাশা-পাঁজর তোমার
মেদবর্জিত শব্দ বিপণনের করো আব্দার,
আমি লজ্জিত।
আরও একবার করছি পূর্ণবৃত্তীয় প্রতারণা
স্নেহের সংকেত-আশ্লেষে জারিত ভুলভাল ভাবনা,
মল্লারের সাথে মেঘের সম্পর্কায়ন!

চোখ মুদে দেখতে জানো?


চোখের সামনে সুন্দর এক সম্ভাবনার
আস্তে আস্তে ফোটা,
সে যত বড় হয়
আমার তত পেছন দিকে ছোটা।

চাঁদও কেন সাথে সাথে চলে?
ছোটোবড়ো সব প্রশ্নের আবোল-তাবোলে,
শৈশবের সাথে আবারও বন্ধুতা
ফুলটুসি অপরূপা - জীবনই গাথুক সে রূপকথা।

পাঁচ আর পাঁচে
দশে মিলে ডাকে,
এমা - আমায় ধলতে পালে না!
কুহক ঘরে কথার তাসে
বানাই বসে খুকির খেলনা।

সাত সমুদ্দুর তেরো নদী পেরিয়ে আসা বণিকও আজ বাংলা জানে!


অনেক দিন আকাশটাকে
দেখা হয় না,
নিজের সাথে দোকা হওয়ার
সুযোগ আসে না।

বহুজাতিক আরশোলা লেখে সহজপাঠ বিস্মায়নের
তাই মুগ্ধচিত্ত বিস্মিত, না না বিস্মায়িত বোকা, না কি প্রাপ্তবয়স্ক পোকার কাতার -
তপস্যা-তুকতাক, সেতো ঋষিধর্ম, জানে না চন্ডাল
শূদ্ররা রাজা নয় - ধরতে শেখেনি তরবারি-ঢাল।

মৃতবতসা মরূঝড়ের শেষে
আপোষহীন ডায়নোসরের শবাস্থি তালাশ,
পাওয়া গেছে, চিয়ার্স, উঁহু - এমএস-বাংলায় বলো
উচ্ছাস...আনন্দ...উল্লাস!

চলো - কাউকে একটু মিছিমিছি ভয় দেখাই


যাইও না - যাইও না কুমার
লোহার ঘরে একা,
কন্যে সে রূপসী
নাকি কোনো রাক্ষসী?

আনুষ্ঠানিক শব্দের ভিড়ে
প্রাতিষ্ঠানিক নগ্ন নীড়ে,
পৌত্তলিক রাত সর্বনাশী
নিষ্প্রাণ তড়িতমোক্ষণ চাহে মন-আলিসা হাসি!

মেডুসা দানবী, পদ্মভোজীর দেশ, আর সার্শী যাদুকরী।

রূপকথা গেয়ে যায় ডানাছেঁড়া নগর-ফিলোমেল
নব্য সেপিয়েন্স-মেদলজ্জার ফাঁদ কাটে ক্ষুধিত নিয়ান্ডের্টেল,
লুঠ হয়ে যাবে যত সেকেলে সম্পদ
উরস-রুধিরে তৃপ্ত তখন সম্পর্ক-উরগ!

এসো তবে পরজনমে


মায়াঝরা দুটি আঁখি
দেখে মোরে সারাক্ষণ,
মনের ক্যানভাসে আজ তাই
নতুন ছবির আয়োজন।

এসো হয়ে দুরন্ত সহোদরা
কানামাছি সেজে করিও খুনসুটি-মশকরা,
যদি হও ঠোঁট-ফোলানো বাপ-সোহাগী মেয়ে
আদর করে বুকের মাঝে রাখব জড়ায়ে।

এসো তুমি মাতৃরূপে
আপনভোলা দামাল শিশির,
সুখেদুখে আগলেছে যে ঘাসফুলে -
দৃষ্টিহীনে দৃষ্টি দিলে
বোধন করিতে দিও পরজনমে।

ইমটি


মেয়ে হলে পর
ডাকব তারে ইমটি,
নগর-কারায় প্রহর গোণা
নরম হাতের আসবে কবে - মিষ্টিমধুর চিমটি!

উজার বাজার - খেলনা যত
বাবা আতো পাতে বোতো!
ভুলে ভরা সে আসলি-প্রলাপ
ভোলাবে ঠিক মেকি সভ্যতা-সংলাপ।

ভুলে ছিলাম - পড়ছে মনে
ছোটো হয়ে ছিলাম যখন,
মনের মাঞ্জা তরতরিয়ে - ভোকাট্টা ঘুড়ি
এই কথাটাই ফিসফিসিয়ে, বলেছে কাল স্বপ্নসুন্দরী।

তুমিনের জন্যে অরিগ্যামি


খুকি!
তোরই চোখে চোখ রেখে এক্ষুণি -
বাবা হয়ে যেতে ইচ্ছে করে
হোক না তা যতই আঠাশে আহাম্মুকি।

আয় না রে তুই টলে টলে
সৃষ্টিছাড়া গানের বোলে,
লুডুর গুটি নতুন করে সাজাই?
ফাটক-ঘরে আটক চাল
আজো আমি বোকাই!

জড়িয়ে নে মা মিটিয়ে দে না
অনেক দিনের তিয়াস,
শূন্য সাকি - উছলে পড়ুক
বাংলা দেশের বিয়াস।

ওড টু ভোদকা-আহমেদ


ধুর! আরো অনেক বানান ভুল আচে। আমি বুঝতে পেরেছি এবারো ভোদকামেদের ভেজাটা গ্যাচে। সক্কাল সক্কাল আবারো মাথায় উঠলো মাল? প্রতিভার পৌণ:পুনিক ধ্বজভঙ্গে বলি, বাহ উস্তাদ, কামাল। প্রক্সির পিঠে চড়ে আপিসের অগ্নিবলয়কে দেখাও চম্পক-কদলী - তোমারই স্পর্শের অপেক্ষা-কাতর, এখানেই, হুরী সত্তর। আইসসালা, বুক নয় তো ব্রকলি!! কাল নয়, আজই জান্নাত চাই, ক্ষুধামান্দ্যের নখরা করে ওরা রাজভোগ চাটে - তুমিও কি তাই? এই সব ইয়েটিয়ে বোধ হয় ডেল-টেলে দেখলে দোষ কেটে যায় - সব কুছ মাপ, সাত খুন বা বেশরিয়তি বাঁদরামি, যখন মস্তকে হাত রাখিবে ছুপা ছামন্ত-শ্রেণী। প্রভু - বুঝিলে না কভু? আজ জিপার দিচ্ছে ফিরি - বাংলায় যারে কয় মাগনা, আসলে তা বজ্জাতি-বাহানা, গুণে গুণে কেশ করিবে ঠিক চুরি! পরচুলা করে দু' ডলার দরে বিকাবে সে বেণী, হে গুণী!! সাধু সাবধান, এখনো সময় আছে প্রাণ নে' পালাবার, এর পর শুধুই জ্বলিবে নুনযুক্ত উ - তোমারই গুপ্তধন বেচে বহুজাত বিধাতা হাসিবে হুঁহুঁ। অনেক তো হল ফালতু বাতচিত, আমার এখানে হিতাচি-কৃপায় কৃত্রিম শীত, বাইনারি-বালিকা দেখতে দেখতে মিঞা দূরে গিয়ে মরো - ইশ্বরপ্রদত্ত হস্তদ্বয়ের আপৎকালীন ব্যবহার করো।

মায়ের কাছে মামাবাড়ির গপ্পো


সামহোয়্যারিন বলে বাংলাদেশে একটা নতুন স্যাটেলাইট টাউনশিপ গড়ে উঠছে আস্তে আস্তে। কর্তৃপক্ষ ঠিক করলেন একটি কোর টিম গঠন করে তাদের হাতে নগরোন্নয়নের ভার তুলে দেবেন। অনেক বাছাবাছির পরে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াল - হাসান, হাসিন, মিশো, মিল্টন, শাহানা, সৈকত ও ইপ্সিতা।

বস প্রথমে একটু গাঁইগুঁই করছিলেন, কিন্তু হাসিন অনেক করে কেঁদেকেটে পড়ল, টিমে মেয়ে না থাকলে মস্তি করবো কি করে গো - অতএব!

বাকিরাও সমর্থন জানাল, সবাই তখন চর্মরোগে কাতর, শরীরের স্থানবিশেষ খালি চুলকায়!!

বসও তাই করাই যুক্তিসংগত মনে করলেন। এ বাজারে চিকেন
চলবে না, সবাই বার্ড ফ্লুয়ের এক ফুঁতে উড়ে যাবে, রেড মিটও একদম বারণ - জনসাধারণের এল-ডি-এল বেড়ে গেলে তার দায়িত্ব নেবে কে?

অতএব, বেয়ারা, চালাও ফোয়ারা - মানে নারীমাংস!

মেয়ে না থাকলে আজকাল ইয়ের পাব্লিক হেব্বি খচে যায়, ডিকশনারিতে মানে পাবেন না, আমি বলে দিচ্ছি - ইয়ে মানে হল চুল।

মেয়ে থাকলে যেমন সোন্দর মার্কেটিং হয়, আবার কোড লিখতে লিখতে কেলিয়ে পড়লে, বেশ একান্তে শরীর এলিয়ে ছোট্টো করে এট্টু রিক্রিয়েশানও হয় বটে।

আর এই মজার মৌতাতে কারো যাতে কারো কোনোরকম ভুল না হয়ে যায়, সে জন্যে প্রচুর পরিমানে ঐ ল্যাটেক্সজাত দ্রব্যটি যোগানোর বরাত পেল একটি লোকাল সংস্থা, রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কাছে যাদের কর্পোরেট অফিস।

এবার প্রশ্ন হল - কে আগে সুযোগ পাবে মেয়েদের সংগে মিচকেমি করার?

যুধিষ্ঠির তো গায়ের জোরে ঠিক করেছিলেন, হাসিন করল ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে।

আসলে তার পেটে খিদে মুখে লাজ, ভালো লাগে বুবস, কিন্তু লোকে লোন নিয়ে ক্যালাবে বলে মুখে বলে বব - মানে বব ডিলান।

হাসিনকে লম্বা না বলা যাক, বেঁটে বলা যায় না, কিন্তু তার অংগবিশেষের দৈর্ঘ্য য়্যাভারেজের চেয়েও কম - উত্তেজনা প্রাপ্তির পরেও সেটির কিস্যু হয় না।

হাসিন দেখলো এইতো ভালো মওকা। সে তার নন-পার্ফর্মিং
ফিক্স্ড য়্যাসেটটিকে হাতে নিয়ে ঘষতে ঘষতে হেঁড়ে গলায় বলল, মনে রবে কিনা রবে আমারে।

কোমলহৃদয়া মেয়েদের পক্ষে এ মর্মান্তিক দৃশ্য বেশিক্ষণ সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না, তারা একযোগে বলে উঠল, কুল বেবি কুল - য়্যু ফাইন্যালি গট দ্য ডিল।

এটা নতুন নয়, পেজফ্লেক্সও নীরবে হাসিনের এমন অনেক প্রি-প্রোগ্র্যাম্ড পেজোমি সহ্য করে, কারণ জাভার সংস্থাগত সংস্করণে ওর মতো ফান্ডা খুব কম লোকেরই আছে।

যারাই একটু-আধটু আইটি জানে আমার মতো, তারা জানে যে যারা এ লাইনে ক্লাস টেন পাশ, তারা ডটনেটের মতো প্ল্যাটফর্ম-নির্ভর বিষয়ে কিছু কাজ করে রুজিরুটি চালায় - আর জাভার মতো প্ল্যাটফর্ম-নিরপেক্ষ জাম্বো ব্যাপারে কাজ করতে গেলে যে বুকের পাটা চাই তা পাওয়া যাবে কেবলমাত্র স্নাতকোত্তর করলে।

আসলে হাসিনটা অনেকদিন একটা ঘরে আটক ছিল তো, প্রিজনার অফ জেন্ডা বা ঝিন্দের বন্দী, এক কথায় যাকে বলে জেন্ড-সার্টিফাইড - তাই বেচারা মেয়ে দেখলে এট্টু আদেখলামো করে মাঝে মাঝে।

এবারে আসি ইপ্সিতার কথায়। শাহানার কথা বলার দরকার নেই, কারণ ও এখানে নিয়মিত আসে, সবাই সবকিছু জানে। মৌলী-কিন্নরীদের সাথে ওয়াটার-কিংডমে কেষ্টো দাদাবাবুদের অক্লান্ত জলকেলির ছবিও দেখেছে সবাই ওর কাছ থেকে।

যা বলছিলাম, ইপ্সিতা শাহানার তুলনায় একটু লাজুক প্রকৃতির, আর ওর য়্যাসেটদুটি য়্যাসিমিট্রিক - সৌকতের মতে। মনে হয় সৈকত ঠিক কথাই বলছে, ইদানিং ওর চোখ দুটো একটু টেরিয়ে গ্যাচে, গড় আয়ু পাঁচ বছর বাড়িয়ে নেওয়ার লোভে।

ইপ্সিতার চোখ দুটি আবার উপচানো-টাইপ, মানে ওর মনের মানুষ ওকে একবার চোখ মারলেই, সেখান থেকে উপচে পড়বে সাঁওতাল রমণীর ঢলোঢলো যৌণতা।

তবে এসব কিছুর থেকেও ওর যে জিনিসটা আমায় সবচে বেশি করে কাছে টেনেছে - কেউ কি আণ্দাজ করতে পারতে পারবেন সেটা কি?

ওর মন।

আপনারা জানেন - ও প্রথম মাসের স্যালারিটা কিভাবে খরচ করেছে?

আংকেল, মানে ইপ্সিতার বাবা ও তাঁর কিছু বন্ধু মিলে, বাংলাদেশের একটা অর্ফ্যানেজ চালান। ঐ বোকা মেয়েটা করেছে কি, মাইনের টাকা হাতে পাওয়া মাত্রই একটা টিভি কিনে এনেছে, যাতে ওখানকার বাচ্চারা ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে পারে।

আমরা কিন্তু ভারি বুদ্ধিমান, কি বলেন, কক্ষণো ঘরের টাকা খরচ করে পরের জন্যে করতে আছে কখনো?





আজকের গপ্পো এখানেই শেষ, কারণ এই গল্পটা যে লিখতে আরম্ভ করেছিল, তার নেশা কেটে যাচ্ছে আস্তে আস্তে - বস্তুতাণ্ত্রিকতায় ভরা এই ভোগ্যবাদী পৃথিবীটা আবার তাকে গিলে খেতে শুরু করেছে।

তুমি কে?


আধ-মানুষ-চওড়া গলিতে প্রথম রোদের আনাগোণা।
( তুমি কে? )
মদের চাটের প্লেট ধুয়ে দেয় কর্পোরেশনের জল তিরতিরিয়ে,
ছোটো বাচ্চা যেভাবে ছোটো-বাইরে করে।
( তুমি কে? )
আর বেশি ভূমিকা করলে সময় নষ্ট হবে,
একটু পরেই বিবাহিত বাবুরা বউয়ের-হাতে-তৈরী
ফ্রেঞ্চ-টোস্ট খেতে খেতে;
ডেইকল্টেই র‌্যাম্পদের নাভির প্রদর্শনী দেখবে ফ্যাশন-টিভিতে!
( তুমি কে? )
ছোটো বোনের কাল রাতেখড়ি হলো,
বহুদিনের পুরোনো রোগও নাকি সেরে যায় কিশোরী-ত্রিবলিতলে;
গন্ডারের খড়গের চে' অনেক কম দাম সেই কোমর-দোলানির!
( তুমি কে? )
রাতের পর রাত পরজীবিদের চকাচক চুমুও ফুরোবে কোনো এক রাতে,
সুস্মিতার মতো লবণাঙ্গ বসানোর টাকাও জমবে না ততোদিনে।
( তুমি কে? )
সে নেহাত পরের কথা;
গত বারের মতো এবারেও, বছরের শেষ রাতে, রাত বারোটার পরেও -
চুটিয়ে চলেছিল ক্লায়েন্ট-সার্ভার-টেকনোলজি।
ওয়াই-টু-কে সমস্যা হয়নি!
( তুমি কে? )
হু এসে দিয়ে গেছে কয়েক প্যাকেট রবার!
বিধায়ক দেঁতো হাসি হাসল - পছন্দ হয়নি প্রীতি-উপহার?
এমনভাবেই হাসতে হাসতে কামড়ে দিয়েছিল ঊরুতে কৃষ্ণপক্ষের রাতে,
লাল ওষুধ লাগানোর ছলে পঞ্চাশ-পেরোনো-ডাক্তারবাবুও;
হাত বুলিয়েছিল সেখানে সাত-আটবার।
( তুমি কে? )
চুন-ওঠা দেওয়ালে লটকানো খুলছি-কিন্তু-দেখাচ্ছি-না পিন-আপটার মতো,
প্রীতি-উপহারগুলোও রোজ রোজ ধুলো খায়;
কারণ ক্লায়েন্টরা কানে কানে বলে - ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর!
ঠিকই তো - রবারের মাদুলি পরে স্নায়ু-ব্যাবর্তন কোণের মান বৃদ্ধি করা,
স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের পক্ষেও অসম্ভব;
সেরকম কিছু হলে কাংড়া-চিত্রে রাধার আহ্লাদী মুখ দেখা যেতো না - তাই না?
( তুমি কে? )
তিরিশটা ত্রপমাণা রাতের ম্যানুয়াল লেবারের দাম কয়েকটা বড়ো-খোকা-টাকা;
এই জন্যেই দশম শ্রেণীতে অসমীকরণ শেখানো হয় -
দৈনন্দিন জীবনে অঙ্ক, অ্যাই মরেচে, এ তো রচনার পয়েন্টের মতো হয়ে যাচ্ছে।
( তুমি কে? )
পাশের ঘরে সবে চল্লিশ-ছোঁয়া মীনার বড়ো ছেলেটা,
একতিরিশ তারিখে কাঁদেনি আগের রাতের মতো;
ওর কলেজে অ্যাডমিশনের টাকা যোগাড় হয়ে গেছে।
( তুমি কে? )





৯৭ - ০০

কোলখাতার ছেঁড়া পাতা


দিতে পারবে? ছোট্টো একটা কোল
আমি উষ্ণতা খুঁজে ফিরি,
শহরের সাথে আড়ি -
তপ্ত দুপুরে ছায়াহারা একাবোকা বোল।

তাড়া করে আসে সব শাঁখ
তাদের জমে থাকা যত বকবক -
এক দিনের ধান-দূর্বা-চন্দন,
পরিচিত নিরাপদ মন কেমন।

আমার রাতের পর রাত নির্বাক কিছু রোজা
তারকাঁটার ওধারে আদর-সোহাগ খোঁজা,
বেঁচে থাকি বিষাক্তের ভিড়ে, নাগরিক আব্দারে, আ-ন-ন্দ নগরে!
প্রতীক্ষায় থাকে কান, ভীরু ভালোবাসার আনমনা আজান, দেখো আজ মাঝদরিয়ায় সেই কাগজেরই সাম্পান।

ইতি বাবা


শ্রাবণ-বালিকার কাছে নতজানু পিতৃত্ব আমার
কপালে কপোল পাত, বুঝে নে পরবাসী হৃদয়-হিসেব, এ জ্যহ্রি বিটিয়া?
বলিতে পারে না অভাগা ভাই তোর
কাজলাদিদিও কন্যা হয়, পেলে ইচ্ছের আঙিনা।

দেখে যাই শৈশব, তার, আটপৌরে অশ্বমেধ
ষাট বছরের স্বাধীনতায় মনখারাপের প্রবেশ নিষেধ!
মনে পড়ে কাঁধ নিয়ে কতো কথা বললি সেদিন?
খুউব বকে ভাব করলি - কিনে চার পয়সার মিষ্টি ন্যাপথালিন।

আমাকে ছিঁড়ে খাবে না কখনো পউষের নখ
মধ্যস্বত্ব ভোগ করে আমিও নিরাপদ - নষ্ট বালক।
তবুও ভয়ে ভয়ে আর্জি জানাই
কর্তব্যেরা ক্লান্ত করলে এক বার এই কোলে শুবি দিদিভাই?

একটি পেন্ডিং ক্ষমা


চিয়ারাপ! যারা দুর্বোধ্য বলে আমার ব্লগে আসতে ভয় পান তাঁদের জন্যে আজকের এই অবতারণা। এখানে আসার এক মাত্র উদ্দেশ্য ছিল হারিয়ে যাওয়া পরিবারটাকে খুঁজে পাওয়া। কারণ আমি বোনের মাথায় চাঁটি মেরে তাকে খ্যাপাতে পছন্দ করি। আর পাগলের মতো কোল খুঁজি - আমার দিদির।

আমার ছোট্টো বোন সুমি - তুমি কি রিয়াধে ফিরে গেছো? তুমি যদি কোনো দিন এই লেখাটা পড়ো আমায় মাপ করে দিও। তোমার এই অক্ষম দাদা তোমার জন্যে কিছু করতে পারেনি সেদিন। যে দিন তোমার প্রতি এক জন অকারণে য়্যাবিউসিভ ভাষা ব্যবহার করেছিলেন। আমি তিরিশে পা দেওয়া এক জন লোকের কাছে আশা করেছিলাম তিনি এভাবে আচরণ করবেন না। তোমার মতো বাচ্চা মেয়ের জানার পরিধিটা এখনো সম্পূর্ন নয় এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু তিনি যদি অকারণ গালাগালি না করতেন, দু কথায় বুঝিয়ে দিতেন ইতিহাস - তাহলে আজ হয়তো সেই ব্যক্তি তোমার ভালোবাসার ভাগ পেতেন। আবারো বলছি, প্লিজ ফর্গিভ মি ডিয়ার সিস, আমি যোদ্ধা নই বলে তোমায় বাঁচাতে পারিনি সে দিন। ব্যক্তি নয়, তার আচরণের বিরোধীতা করার শিক্ষায় তুমি শিক্ষিত হয়ে ওঠো, এই প্রার্থনাই করি। আর অনেক অনেক বই পড়ো, রেফারেন্স ফ্রেমটাকে মজবুত করে বানাতে হবে তো, উঁ? আমাদের সবার কাছেই একটা করে প্রিজ্ম আছে, যদিও সেটাতে সাত রঙ খেলাতে পারে খুব কম লোকে। আসলে ফাউ জিনিস তো - তাই আমরা এটার কদর ভুলে যাই। তো দেখতে দেখতে ওপরওয়ালার এক সময় ভীষণ রাগ হয়ে যায়। কিরে ব্যাটা! আমার জিনিসের মান রাখতে পারলিনে? তখন তিনি সেই প্রিজ্মের স্পন্দন থামিয়ে দেন। তুমি ঠিক রঙ খেলাতে পারবে - আর সে দিন সেই ময়ূরকন্ঠী ছটার ঝলসানিতে দেখবে বিজ্ঞান আর ধর্মের মহামিলন।
চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাবে তাদের কোনোদিন আলাদা অস্তিত্ব ছিল না। তুমি সেই ধর্মে দীক্ষিত হও যা তোমাকে আতুরজনের সেবা করতে শেখাবে, মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে এর পাঠ নাও। একই সাথে রসদ সংগ্রহ করে নাও মানবকল্যান-বিজ্ঞানের, বিবেকানন্দকে বুকে নিয়ে। আর আমাকে ছোট্টো একটা প্রমিস করো - যে তুমি এখন থেকেই ওনাদের বাংলা ভাষার ভালো ভালো শব্দগুলি শেখাবে। উনি এবং আরো কিছু লোক, এদের দেখে বড়ো কষ্ট হয় গো, Capra hircus-এর স্ত্রীলিঙ্গ শব্দটি ছাড়া বাদ বাকি যা কিছু ইশকুলে শিখেছিলেন - সবই ভুলে গেছেন ওনারা।

এই লেখাটি ভুল ভাঙানিয়া পোস্ট। হয়তো অনেকেই ভাবেন আমি য়্যারোগ্যান্ট। ঠিক তার উল্টো, আমি একেবারেই প্রচারবিমুখ, তাই রেপ্লাই দেওয়া হয়ে ওঠে না একেবারেই - যতো রাজ্যের লজ্জা এসে ভিড় করে। কারণ প্রতি-কমেন্ট করলেই তো আবারো লোকের চোখে পড়ে যাবে আমার হাবিজাবি। কষ্ট করে নিয়মিত এসে আপনারা আমার ছাইপাঁশ পড়েন - কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের সঠিক ভাষাটাই খুঁজে পাচ্ছিনা। বয়সের দোষ আর কি! এই সামনের সীতম্বরে ঊণতিরিশ হবো - তাই মাঝে মাঝে স্মৃতিশক্তি খামখেয়ালি হয়ে উঠে।

হুমমমমম! মনে পড়েছে - আপনাদের সব্বার জন্যে অর্গ্যানিক ধনিয়া। চাটনি বানিয়ে খান ও আগামী ভ্যালেন্তাইন্দিনে বান্ধবীদের বোতল উপহার দেন - অবশ্যই ধনে পাতার সসের।

ভাই দেবদারু, তোমার অনেক দেরী করিয়ে দিলুম, এই বার আসল কথায় আসা যাক। দেখো, দুর্বোধ্যতার আশ্রয় নিই একটাই কারণে, ইন সেল্ফ-ডিফেন্সে, পাছে আমার মনের কথাগুলো কেউ জেনে ফেলে হিপক্রেট ঠাউরায়। যে ক্ল্যাসে আমি বিলং করিনা তাদের নিয়ে লেখবার অধিকার বোধ হয় আমার নেই।

তো, তোমার চেষ্টাটা খুব সুন্দর হয়েছে, আর দেখো কবিতার সঠিক ব্যাখ্যা বলে কিছু হয়না। পাঠক যেভাবে নেবে, ভালোবাসবে, সেইটেই চূড়ান্ত - আমরা সবাই রাজা। কথায় আছে যে ছবি কথা বলে, ভিডিও-ভাবনায় তুলে ধরার চেষ্টা করলুম আমার অনুভূতির অনুষঙ্গ, হীরক রাজার দেশে আসলেই একটি ম্যাস্ট্যার্পিস।

স্বাধীনতা-ষাঠ, আহ্লাদে কুপোকাত
চৌদ্দই মার্চ - নারকেলি কুলের যাকাত,
ভর-পেট খেয়ে চোখ ঢুলঢুল
যীশুরা ঘুমোয় পরে হাফ-পেন্টুল!

প্রথম লাইনটা সেল্ফ-এক্সপ্ল্যানেটরি, স্বাধীনতার ষাট বছরের ভর্সাপূর্তিতে সবাই ফুর্তিতে ব্যস্ত, রাষ্ট নিজের ক্ষত ঢাকতে শিশুশ্রম নামক প্রসাধনী- আইনের চলন করেছে গেল অক্টোবর থেকে। বেশ, এবার পরের সিঁড়িতে নামো, নারকেলি কুল খেতে খেতে। বিচিটা মুখ থেকে ফেলে দেওয়ার আগে এক বার দেখো, কি, বুলেটের মতো লাগছে না? হাফ-পেন্টুল মানে বয়স কম, বাচ্চা, শিশুরা তো যীশুই - তাই না? চৌদ্দই মার্চ নন্দীগ্রাম-ফায়ারিঙে বেশ কিছু শিশু-কিশোরের মৃত্যু ঘটে।

আমি কোনোদিনই এভাবে লিখি না - আজ হটাত করে কেমনতরো সাহস পেয়ে গেলাম এই অকপট স্বীকারোক্তির। প্রিয় সম্পর্কের কাঠগরায় দাঁড়িয়ে মিথ্যাভাষণের হিম্মত এই বান্দার নেই।

যতো দুরেই পালাতে চেষ্টা করো না কেন তুমি - ভালোবাসার টানে বারে বারে ফিরে আসতেই হয়। আমি যে চু-কিতকিত খেলবো বলে কথা দিয়েছি আমার ছোট্টো বোনটারে - না আসলে ও ঠোঁট ফুলিয়ে বসে থাকবে যে।

দিল তো পাগল হায় - একটি ( A ) নেপালী উপকথা


নমস্তে সাবজি। হাম ডিডি হায়। মানে দূরদর্শন? নেই রে বাবা - ডিডি কা মতলব ডিলু দর্জে। ও টেলর? আরে সাব তুম সমঝতা নেই, দ-র-জে, ফ্রম দ্য ল্যান্ডব গুম্ফাস আকা নেপাল - যেখানে লোকেরা অফার ইউ ছাং।

তো হামি ঘুমতে ঘুমতে কামননিনে চলে এলাম। এখানে একটা ভান্দু টায়প লড়কা আছে। মহান মুলুক না কি যেন নাম। ভান্দু মতলব ভাই + বন্দু। মোয়াখালির মুলুকবাবুর কবিতা দেখে হামার নিদিয়া ফুররররর হয়ে গেল। এখনি যাওয়ার কথা বলতে আছে রে পাগলা? তুমি না হামার গোল্ডেন ভান্দু মানে সোনা ভান্দু?? রোজ এমনি এমনিই খাও - ঝুনো হর্লিক্ছ, থুক্কু, ঝুনিয়র হর্লিক্স।

দেখো এল্টন দাদা কেমন সুন্দর দুলে দুলে গানা গাইছে। এ সব দেখে দিল গার্ডেন-গার্ডেন করো মুলুক মিঞা। আজ হামি তোমাকে আমার এক ফ্রেন্ডের ইশটোরি বলব। কলকটায় থাকে, এমানন্দ নাম, দেবানন্দের পয়েন্টোয়্যান-রেক্যারিন দেখতে।

তো হামার সেই ফ্রেন্ড কি বলে জানো? ডেথ নিয়ে তার উয়িশ্লিস্ট হল - সে ওর সাথে কোনো রকম ফোর্প্লে করবে না। এক দম টার্জান কা মাফিক...পুরো আউআউআউউউউউ...না থোড়া গলতি হয়ে গেল...সুপার্ম্যান কা ইশটাইলে রতিক্রিয়া করেগা। এক সেকেন্ড মে কেস খালাস। এক বার হামার সে দোস্ত পুছলো কি - তুমকো মালুম হায় সায়কায়াট্রিমে কেয়া বোলতা? হামি বললাম কি না বাবা না - হামি খালি কুক্রি চালাতে পারি। তখন ও হামায় সমঝে দিলো কি যিসকো ডেথ কা ফিলিং নেহি হুয়া - ও আভি বাচ্চা হায়। ও যব ছোটা লড়কা থা, সেমেস্টর-এক্স্যাম দেতা থা, য়্যুবিকা বিয়ার খাতা থা - তব পতা চলা ইয়ে কম্বখ্ত মওত কিস চিড়িয়া কা নাম হায়। ছুট্টি হয়ে গেছে - এ দিকে ব্যাঙ্গালর-কলকটা সব ফ্লায়ট ভর্তি। তখন হামার দোস্ত কি করলো, একটা ছ্যাকরা বাসে চাপল, ওটা ভোল্ভো ছিল না - সায়বারাবাদে গিয়ে সাহারাতে চাপবে। এখন অবশ্য জেট লায়ট বলে, তো যাই হোক, প্রায় আধা দিনের পথ - আর রাতের বেলায় বাস তো ঘুমে ঘুমে কোথায় যে নিয়ে যাচ্ছে খুদা গওয়াহ! সব লোগ নিদে আছে, লায়ট ভি বুঝায়ে দিয়েছে ড্রায়ভার, খালি হামার দোস্ত জেগে আছে - বোধ হয় ঠিক এই জন্যেই। সির্ফ কয়েক সেকেন্ডের জন্যে সারা শরীরে যেন কারেন্ট খেলে গেলো, হামার দোস্ত বুঝে গেলো কি এ সব নওটঙ্কি ছেড়ে ওকে ভি চলে যেতে হবে কিসি এক সাম, অওর উ লওন্ডিয়ার সামনে কোনো নখরা চলবে না - সালি যব আঁখ মেরে ফায়ন্যাল করবে তো পেয়ার যাতাতে উড়কে আসবে রে। বুড়া বাবাকে কসম, তোমরা যাকে গৌতামা বলো, হামি একটাও বানিয়ে বলছি না মুলুক ভাই। অওর একঠো বাত হামার দোস্ত বলেছিলো - লেকিন হামি মিনিং বুঝিনি। ও বলে কি - কওন জানে ইয়ে জিন্দেগী খুদ হি এক কয়টাস ইন্টেরাপ্টাস শায়দ?

তোমাদের ট্যাগোরসাবই বলেছে কি, এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন জিনিস, মরণে তাহাই তুমি করে গেলে ফিনিশ? আরে হামি ভাঙা ভাঙা বাংলা বলতে পারি রে! খালিপিলি মওতের কথা বলে দিল নাজুক করে দাও কেন? দু ঠো কিস্যা শোনো। এক বার কি হল সাল্লু কেবিসিতে গেছে। সব কোশ্চেনের উত্তর দিয়েছে ঠিক ঠিক - ওয়াও! আখরি সওয়ালটার সহি জবাব দিলেই এক কড়োর পেয়ে যাবে ও। তো ইশকিরিনে যা ফটু দেখাচ্ছে - ও বেচারা বুঝতে না পেরে মাথা চুলকুচ্চে! ব্যাটা জিন্দেগীতে কোনো দিন পরেছে ও মাল যে শার্ট বলে চিনবে?

অওর এক বার কি হল - সুইমিং করতে করতে মল্লিকার মন্দির দেখার খোয়াইশ জাগল। ব্যাস - যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। এ দিকে গার্ডবাবাজির তো আক্কেল পুরো গুড়ুম। সেকেওরিটি কোনো রকমে ভয়ে ভয়ে বলছে...মল্লিকা বেন...।

এ...বেন বোলনেকা নেই...!

সরি মল্লিকাজি - লেকিন আপ বিকিনি প্যাহেনকে অন্দর নেহি যা সকতে।

আব ইয়ে ভি উতর্না পড়েগা কেয়া জালিমো!

তো হামি তোমাকে কলকটার কথা বলছিলাম না? হামার দোস্তই থোড়া বহোত বেঙ্গলি শিখিয়ে দিয়েছে। বেড়াতে গিয়ে অনেক দিন ছিলাম সেখানে। এক বার কি হলো, লেকের পাশ দিয়ে হাঁটছি দুজনে, না জানি কাঁহাসে ইয়া বড়া এক চুহা চলে গেল সামনে দিয়ে। তো হামি ওকে পুছলাম তোমরা এতো বড়ো চুহাকে কি বলো ভাই বেঙ্গলিতে? বলে কি না বুদ্ধিজীবি! তো সে নাম শুনে হামার এক দম মাস্ত লেগেছিল, হামি পুরা কে পুরা ইয়াদ করে রেখেছি, বেঙ্গলিতে চুহার এতো বিন্দাস একটা নাম দিছে কেউ আগে জানতো কভি? তো অনেক ক্ষণ দিল খুলে হাসার পরে এমানন্দ হামায় বললো কি ওদেরও একটা গর্ত আছে, মাঝে মাঝে বেরোয়, আবার ঢুকে পড়ে - ওরা তো চুহাই স্যান্স দ্য ন্যাজ। কিঁউকি? দোস্ত বলে - যব ফন্দীগ্রামমে চকলেট বোমা পড়তা হায় তব ইয়ে বুদ্ধিজীবিলোগ চুকচুক কর্কে চায়াগ্রা খাতা হায়।

দে য়্যায়োক ওয়ন ফায়ন মর্নিন য়্যান্ড ফ্যাউন্ড ইটসেল্ফ এরেক্টেড - দেয়ার কন্সেন্স। তো ঝান্ডা নিয়ে চললো সবাই নোয়্যাম চম্স্কির মেসেজ পোস্টারে লিখে - আম্মা দেখ! কেয়া ঝামেলা - দোনোকো এক কর ডালা? নোয়্যাম অওর প্যামেল্যা। আরে বাবা - নন-পার্ফর্মিং আর ফিক্স্ড য়্যাসেট এক হল? প্রিয়াঙ্কা-বিপ্সের ওব্যেশ খারাপ করে দেওয়ার কথাটা ভুলে যেতে পারলি?? চম্স্কিচাচ্চুর নিজেরই তো ভাঁটার সময় চলছে - স্টকে এতো রস নেই যে চিঁড়ে ভেজাবে। নিদেন পক্ষে যদি আনতিস সিক্তবসনা ঊর্মিলা - কলকটায় বসে যেতো পিচ্চি ফ্র্যাঙ্কফুর্ট-মেলা।

এ সবই অবশ্য এমানন্দের জবানি। হামি তো থোড়া থোড়া বাংলা জানি। ও হামায় বলেছে কি - রাত গয়ি, বাত গয়ি, তালি বাজাও! তো ঐ সব চুহারা নাকি তালি বাজাতেও পারে না ঠিক ঠাক - নীল নীর্জনে য্যায়সা সুড়সুড়ি-ফিলাম দেখে অওর হাতের এমার্জেন্সি য়্যুস করে। হামি তখন দোস্তকে পুছলাম - কেন ভাই কলকটায় আর ভারতে ভালো বই হয় না রে আর ঘটকসাবের মতো? সালাম নমস্তে...কিং খান...তারপরে তোমাদের কে আছে না ড়িতুপড়নো?

আরে বাপ রেহ! শারুকের কথা বলতেই ও এতো খেপে গেলো কি পুছোহি মত। কি বললো শুনবে?

যদি কোনো দিন সামনা সামনি শারুককে পায়েগা - তো টপ ফ্লোরের চুল কচাকচ কামাকে সবসে পহেলে হাম উসকো শ্রীচৈতন্য বানায়েগা।

আরে এতো গুস্যা করছো কেন ভাই ওর ওপরে? যখন হামি ওকে পুছলাম তখন বলে কি - পানডু রাজাকা রথের মেলেমে খোয়া-হুয়া কুপুত্র গান শারুক খান, সে নাকি টিভিতে য়্যাড দিয়েছিল কোমল পানীয়মে হার্মফুল কেমিক্যাল নেহি হায়, অওর হামারা বাচ্চালোগ জলদুধ ছোড়কে ওহি খাতা সারা দিন। তুম কেয়া সোচতে - এমানন্দকা কোমল মস্তিষ্ক এমনি এমনি গরম হোতা?

আর সালাম নমস্তের কথা বলছিলে না? অল্রেডি তো পাব্লিকের মনে ধারণা বদ্ধমূল, দুষ্ট সায়েবলোগ শাদীবিহা নেই করতা, যব ভি চান্স মিলতা তো লড়কা-লড়কি খালি টুঁই টুঁই করতা। আরে - লিভিনের মতো সেন্সেটেভ ইস্যুকে কেউ এ ভাবে ডেপেক্ট করে? বিয়ে মানেই কি কমেন্টমেন্ট আর লিভিন একোয়্যাল্স টু পার্মেসেভনেস?? কেউ মনে হয় ওনার লার্জ ইন্টেস্টায়নে খুউব জোরসে একটা চিমটি কেটে পালিয়ে গেছিল - তাই সিদ্ধার্থজি সব গুলিয়ে ফেলেছেন। লোকে তো পুরো খচে বোম। প্রিটির পেটে বাচ্চা এসে গেছে, আর সায়ফ তুই বে করবিনে মানে, শিগ্গির শ্লা সোনামুখ করে সাত-ঘূর্ণী দে - নইলে খেলবোনা কিন্তু নেক্স্ট টায়ম। হাম ভারতীয় হায় না? আল্লা! কমিটমেন্ট কাকে বলে ঐ সমস্ত কাপল্সদের কাছ থেকে শেখা উচিত কলকটার বাঙালীদের। তোদের কি আছে র‌্যা? ইশতিরিকে ভাইছুটি বলে ডাকার চেষ্টা করে দেখেছিস কোনো দিন?? নি:স্বভারতী দেখে কেউ আর পয়সা ঠেকাবে না, যদি পারিস মুম্বই থেকে পোল্ড্যান্সের ট্রেনার নিয়ে আয়, তবে যদি কলাইওঠা বাটিটা একটু ভারি হয়।

গহেরাইকো তলাশো দর্জে ভাই, ফিল্যাডেল্ফিয়্যা দেখে শিখতে হয় সাব্জেক্টের ট্রিটমেন্ট, খালি এক বার দেখো ক্যায়সে হ্যাঙ্ক্সদাদানে ভাবনাওকো তরাশা। চিনি কাম ইসোল্সো সাম্তিন নায়স টু ওয়চ। টার্মিন্যালি ইল লোকেদের কথা বেশ একটু অল্ট্যার্নেটেভ ভঙ্গীতে বলেছেন ভদ্রলোক। নবমী সেক্সি এক কথায় স্প্লেন্ডেড। য়্যান হুস ঋতু - দ্য গ্রেট হোয়ায়ট পর্ন মেকার ফ্রম কলকটা? অতো ভালো তারাশঙ্করের একটা গপ্পো পুরো ঘেঁটে দিয়েছেন। না, খুল্লামখুল্লা দেখিয়েছেন বলে বলছি না, যৌনতার যে নিজস্ব একটা ন্যারেটিভ থাকে - সেটাই ঠিক মতো হ্যান্ড্ল করতে পারেননি অন্তর্মহলে। ঘুরে ফিরে সেই একই কথা, ব্যাক টু স্কোয়্যারোয়্যান, দ্য নিডব্দি রায়ট ট্রিটমেন্ট।

আঁয়! তো হামার এন্টার্টেন্মেন্টের কি হবে দোস্ত?

কেন? গান শোনো - মনীষা মুর্লি নায়ারের, এই সময় দাঁড়িয়ে যারা রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা করেন, সেই শ্রীকান্ত-লোপা প্রজন্মের মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী হলেন মনীষা। গলাটা এক বার শুনলেই মোহরদির কথা মনে পড়ে যায়। ওর দাদা মনোজও যথেষ্ঠ ভালো গান। প্রতিটি ক্যাম্প্যাসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই ভাইবোন-জুটি। যদি বলি রবিবাবুর গানে কলেজ-সার্কিটের বাচ্চাদের আগ্রহ এনারাই রেজুভেনেট করেছেন - তাহলে খুব একটা ভুল বলা হবে না বোধ হয়। আসলে অবাঙালী বলেই ওনাদের এতো নিষ্ঠা আর সাধনা। আর কলকটার বাঙালী বোলপুর প্রসিদ্ধ মিষ্ঠান্ন ভান্ডার থেকে ন্যাংচা চুরি গেলে সিবিয়াই
তদন্ত করে।

হাঁ দোস্ত - হামি ট্যাগোরসাবের একটা কিতাব পড়েছি। শেষের কবিতা। লড়কা-লড়কি সালমে এক বার ডেটিং করতে আসবে। ফির সেপ্রেট বিল্ডিঙে উঠে ইশারা করবে, আরে, দিয়া জ্বালাইলেহ! ভেরি ভেরি নটি!!!!!

য়াপ! হে দর্জে ভাই, য়্যু নৌ সাম্তিন, আয় ফায়ন্ডিট প্রিরি খুউউউউউল ইভ্ন্ন্যাও।





আমার কথাটি ফুরোয়নি
নটে গাছটি মুরোয়নি,
হাফ-টিকেটে নন্দন-টুয়ে দেখেছো কি মৃগয়া?
ফ্রাই রাইখস্টাটের হাঁসুলি - তু তো গয়া!





A মানে আ = অ + অ ( অসফল তাই অসমাপ্ত )

সায়ফায়কু [ ১ ]



স্টেম-সেল চিকিৎসা হল
নবজাতক হ্বদয় পেলাম।
এবার ভালোবাসবে?





Scifaiku ie Scifi-Haiku

সেন্র্যু [ ১ ]


তুমি কি হিসেবী ছেলে?
বান্ধবীর বাবাকে বললাম
একা একা হানিমুনে যাবো।





Senryu

টাঙ্কা [ ১ ]


আমি ওকে ভেংচে দিই
মেয়েটা থতোমতো খেয়ে যায়
তারপর হেসে ফেলি খুউব
ও অবাক হয়ে দূরে চলে যেতে থাকে
জানা হয়না - তোর নাম কিরে খুকি?





Tanka

শীঘ্র-স্খলনে পাপ নেই


শীঘ্র-স্খলনে পাপ নেই!
য়্যাস্ট্রগ্লিয়ার আকাশে স্বপ্নেরা শুয়ে থাকে,
আম আঁটির ভেঁপুর ছবি আঁকে -
শীঘ্র-স্খলনে পাপ নেই!
সার্জেনের অসিতে বক্ষ জাগিবে,
এম্বিয়ে-বালক ফিরিয়া আসিবে -
এখানে উন্নয়ন, পেগ্ড-প্রথায় পছন্দসই ভ্রূণ নির্বাচন।
শীঘ্র-স্খলনে পাপ নেই!
আপনি আমায় পুংকিসোনা বলে ডাকেন কেন?
ভেতর ছুঁয়ে যায়, আজো, তোমার সে প্রশ্ন
অ-বাক সেদিন, বলতে পারিনি কিছুই
জানতাম না যে, শীঘ্র-স্খলনে পাপ নেই!

শরীর জাগিছে তাহাদের


শরীর জাগিছে তাহাদের
নিচে বেঁচে থাকে চিহ্নেরা - অজস্র,
ঈপ্সিত শব্দের কামড়ের।
থ্যালামাসে প্রার্থনা, জল্পনা জাল বোনা, অবশেষে এক দিন পাইনিয়ালের আদেশ -
আজ থেকে সব খেলা শেষ।
মর্ত্যের মমিদের সাথে বসে সারাবেলা অবহেলা-অমৃত সিনান!
এই স্বাধীনতা, তোতাপাখি-কথা, ক্লীব কলিকাতা
...তোমাদেরই থাক, নাড়ী কাটে কষ্ট, নীড় আজ নষ্ট
প্রযুক্তি-দধীচি খুঁজে মরে নীলাভ রোদ্দুর, মহাবিস্মিত গ্রহণীতে অবাক বিষপান
...তাহাদের, সত ও সুন্দর, নিরন্তর।
ব্যাঙ্গমা-যণ্ত্র, যেন ফুসমণ্ত্র, ঠিক নিয়ে যাবে সেই দিন -
দেনা করে অভিনয়, শৈশব বিক্রয়, শহরের শীতকার
হাড়-সদাগর, আর তার কার্বন-লেনদেন
...পিছনে পড়ে থাকে, এসব, সময়েরই বাঁকে
আজ, শরীর জাগিছে তাহাদের, তারাদের।

টনটনে জ্ঞান ও নগর-সংকীর্তন


আমাকে চিনিস? আমি মানব, মানে মনা
সালমানের মতো কথায় কথায় আধ-ন্যাংটা হলে,
এফটিভি-বালিকা-টাইপ হাড়পাঁজরাগুলো -
আমারও যেত ঠিক গোণা।

দুস সালা! চার-অক্ষরের বোকা, মধ্যবিত্ত
ফুলের মতো পবিত্র,
তোদেরই তো সব কিছু -
সনি থেকে স্যান্ত্রর-উত্তল-পাছু।

তবে কোনো কোনো রাতে আমিই নারায়ণ
চায়নিজ চাক্তি চেখে নীল নির্বাণ,
মন্দ-পরী দেখে ফেলে তথাগত হই -
একা হাতে ঘুম-ঘরে যণ্ত্র জাগাই!

ঠিক এখানে


ঠিক এখানে! সুখী মানুষের ভিড়
স্নেহরুদ্ধ হৃদয় বওয়া ক্লান্ত শরীর,
ধার-তাসের সংখ্যা গুণে পরীদের প্রণয়জ্ঞাপণ
যণ্ত্র-মাঝে নির্বাসিত রাজার জীবন।

রং-তুলি...চুল-চিত্রকর...এসব হিসেব আজ নাহয় থাক
বুকের মাঝে গরজেছে পাগলা রায়ডাক,
ঘুরে চলে কিছু অভ্যস্ত অভ্যাসের অন্তহীন লুপ
সেদিনের বাচাল শিশু আজ একেবারে চুপ।

সাফল্য-দায়িত্ব-প্রত্যাশা সমুদ্র পেরিয়ে ইচ্ছেরা ট্যান্ট্যালাস
তবুও আরেক বার ভালোবাসার ভাঁজ খুলে দেখাতাম প্রাণেরই উল্লাস,
তোমার আঁচল পেলে আমিও অমল হতে পারি
বিদায় জানিয়ে মোহিনী নিয়ন - এই আনন্দনগরী।

মনুষ্যায়ন


সময়টা 2050 খৃষ্টাব্দ। মানুষ নামক প্রজাতিটি একবিংশ শতাব্দীর কিছু পরেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত ‌‌হয়ে ‌গেছে প্রভুত্বকামী শক্তিজোটের সঙ্গে অন্যান্য শান্তিকামী দেশের সংঘর্ষে। পৃথিবীতে আজ robot-দের রাজত্ব। এই robot-রা অতি উন্নত super humanoid technology-র দ্বারা সৃষ্ট। যার ফলে চে‌‌হারা থেকে আরম্ভ করে এদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, রক্ত, শিরা-ধমনী সমস্ত কিছুই মানুষের মতো। এদের শরীরের সমস্ত কিছুই অতি উন্নত polymer-এ তৈরী। আবার কোথাও কেটে গেলে মানুষের মতো এদেরও রক্ত পড়ে - কৃত্রিম যদিও। এমনকি এরা সন্তানসৃষ্টিতেও সক্ষম। এই পঞ্চম প্রজন্মের robot-দের সঙ্গে পূর্বের প্রজন্মের robot-দের মৌলিক পার্থক্য ‌‌‌‌‌‌হলো এরা বিশেষ এক ধরণের bio-neuron সমৃদ্ধ। যার ফলে এদের মস্তিষ্ক মানবিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। অর্থাৎ স্নে‌‌হ, মায়া, মমতা প্রভৃতি গুণগুলির সঙ্গে লোভ, ঈর্ষা, ঘৃণা ইত্যাদি দোষও এদের মধ্যে দেখা যায়।

আজ SH5M523 ও SH5F190-এর ফুলশয্যা। SH5M523 অর্থাৎ super humanoid 5th generation male serial # 523 - পঞ্চম প্রজন্মের মনুষ্যাকৃতি পুরুষ robot যার ক্রমিক সংখ্যা 523. আর SH5F190 অর্থাৎ পঞ্চম প্রজন্মের মনুষ্যাকৃতি স্ত্রী robot যার ক্রমিক সংখ্যা 190.

SH5M523 এক দৃষ্টিতে SH5F190-র দিকে চেয়ে থাকে। লাল বেনারসীতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে। এর পরের দীর্ঘস্থায়ী চুম্বনটির জন্যে কোনো ভূমিকারই প্রয়োজন ‌হয় না তাদের। SH5M523 আস্তে আস্তে SH5F190-এর শরীর থেকে শাড়ি-blouse-bra-petticoat খুলে ফেলে।

কিন্তু তার পরে নিজেও নগ্ন ‌হয়ে যখন তার যোনিদেশে লিঙ্গ প্রবিষ্ট তখন চিৎকার করে ওঠে SH5F190. বাধা দেয় সে স্বামীকে। কিন্তু বেশি ক্ষণ তার সঙ্গে যুঝতে পারে না । সজোরে লিঙ্গ চালনা করতে থাকে SH5M523. তার পরে এক সময় ক্লান্ত ‌‌‌হয়ে বউয়ের পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

ফোঁপাতে ফোঁপাতে SH5F190-ও ঘুমিয়ে পড়ে এক সময় তার সদ্যোজাত যণ্ত্রণাকে সঙ্গী করে। এছাড়া তার আর কিই বা করার আছে। কারণ মানুষদের মতো robot-সংহিতাতেও স্বামী স্ত্রীর ইচ্ছের বিরূদ্ধে সঙ্গম করলে তাকে ধর্ষন বলে গণ্য করা ‌হয় না।





৯৭ - ০০

র‌্যাম্বোর প্রেম


এই পৃথিবীতে দু' শ্রেণীর লোক আছে। এক - যারা ফুলশয্যায় নববধ‌ূর সঙ্গে সহবাসে তার অনিচ্ছা প্রকাশে স্তিমিত ‌হয়ে পড়েন এবং জীবনভোর তার থেকে মুক্তি পান না। এবং দুই - যারা স্ত্রীর ও কি করছো ছি ছি শুনে বীরদর্পে বলেন বেশ করছি ‌হি হি। এই দ্বিতীয় শ্রেণীর লোকের মধ্যে পড়েন আমাদের পাড়ার রা‌হুল বোস - পাড়ার ছেলেরা যাকে আড়ালে রাউল-সর্দার বলে ভেঙচায়। তবে তাঁকে নয় - তাঁর এক মাত্র পুত্র র‌্যাম্বোকে নিয়েই আজকে আমাদের গল্প।

র‌্যাম্বো প্রেমে পড়েছে। তা - সেটা কি এমন আশ্চর্যের কথা? কবি তো বলেইছেন প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে। শুধু জাল গুটিয়ে নিতেই যা দেরি। দ্বিতীয় কথাটি অবশ্য কবিবর লিখতে ভুলে গেছিলেন। তা যাই হোক! আপনি আপনার শালির প্রেমে ‌হড়কাতে পারেন, আপনার মেয়ে coaching class-এ বাদল sir-এর সঙ্গে, বউদি office-এর boss-কে নে' চুপু-চুপু - আর র‌্যাম্বোবাবু প্রেমে পড়লেই সেটা অন্যায়? এ কিন্তু ভারি অন্যায় আপনাদের! IPC-র কোথাও কিন্তু লেখা নেই যে class 5-এর ছেলেরা পাগল-প্রেমিক ‌হতে পারে না।

র‌্যাম্বোর ক্ষেত্রে কিন্তু পূর্বেল্লিখিত ফাঁদটি যে সে ফাঁদ ছিল না - ছিল একেবারে booby trap। কয়েক মাস আগের কথা ‌হবে। school থেকে ফিরে সে একমনে aeroplane চালাচ্ছিল computer-এ। খুব বিরক্ত ‌হচ্ছিল সে। যতো বার plane ওড়াতে চাই বারে বারে যায় ভেঙ্গে। হঠাৎ দিদির ঘরে গলার আওয়াজ পেয়ে দেখে একটা মেয়ে তার দিদির সঙ্গে গল্প করছে। সেই প্রথম চারি চক্ষুর মিলন। তার college-এ পড়া দিদির বান্ধবী শ্রেয়সী সেদিন থেকেই র‌্যাম্বোর প্রেয়সী! যাকে বলে একেবারে প্রথম দর্শনেই প্রেম।

রূপকথায় পড়া কেশবতী কন্যার চেয়েও মেঘ-কালো তার খোলা চুল - তা থেকে কি সুন্দর মিষ্টি ‌গন্ধ বেরোয়। মেয়েটাকে খুব ভালো লেগে গেছে র‌্যাম্বোর। দূর থেকে যখন ‌হেঁটে হেঁটে আসে তখন মনে হয় যেন Cindy Crawford catwalk করতে করতে তাদের বাড়িতে আসছে। চোখ তার - মুখ তার - Picasso-র তুলি টানে আঁকা। ‌হাসলে পরে ঠোঁটের কোণে নীলচে ব্যথার আভাস। ক'দিন আগে যখন ‌হলদে পাড় শাড়ি পড়ে বাড়ির পুজোয় অঞ্জলী দিতে এসেছিল - তখন তাকে সরস্বতী ঠাকুরের চেয়েও বেশি রূপসী লেগেছিল র‌্যাম্বোর। আর বিভৎস নাচে। র‌্যাম্বো লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেছে এক দিন। It's the time to disco গানটার সঙ্গে এতো সুন্দর কোমর দোলায় না - উফফফফফ! এ মেয়ে রামধনুর ওপারের দেশের মেয়ে।

র‌্যাম্বো ঠিক করে ফেলেছে। শ্রেয়সীকে সে বউ করবে। তারপরে তাকে নিয়ে honeymoon-এ যাবে - না - কোথায় যাবে সেটা এখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি। এই ব্যাপারটাতেই তার মনে ইট্টুসখানি খটকা আছে। সবাই বলে honeymoon-এ অমুক জা’গায় গিয়েছিলাম তমুক জা’গায় গিয়েছিলাম। বাড়িতে বোধহয় honeymoon করা সম্ভব নয়। আর honeymoon-এ ঠিক কি কি করতে ‌হয় সে সম্পর্কেও তার মনে খুব একটা স্পষ্ট ধারনা নেই। honeymoon মানে তো বউয়ের সঙ্গে বেড়ু-বেড়ু করতে যাওয়া। এ’ পর্যন্ত যতগুলো cinema দেখেছে র‌্যাম্বো সবেতেই খালি এক scene দেখায়। বর আর বউ একসঙ্গে খাটে বসে থাকে। চুপ করে বসে থাকতে থাকতে মেয়েটার বোধ‌হয় খিদে পেয়ে যায়। তখন ছেলেটা তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেয়। এই তো আরেকটু পরেই সকাল ‌হয়ে যাবে। তখন আমরা ডিমসেদ্ধ-দুধ-cornflakes খাবো। তারপরে যখন তারা ঘুমু-ঘুমু করছে - ব্যাস! ঠিক সেই সময় ফচাৎ করে আলো নিভে যায়। movie-ওয়ালাদের ওপরে খুউব রাগ ‌‌হয়ে যায় র‌্যাম্বোর। আর দু’ minute দেরি করে আলোটা নেভালে কি এমন ক্ষতি ‌হতো? এখন সে কাকে জিজ্ঞেশ করবে - মাকে? না - মাকে জিজ্ঞেশ করে কোনো লাভ নেই - মা সব কথাতেই না বলে। এক দিন মাকে জিজ্ঞেশ করেছিল - moods কি? মা তখন খুব গম্ভীর হয়ে বলেছিল - জানিনা। শেষ পর্যন্ত তার বন্ধু অভিষেককে জিজ্ঞেশ করতে সে অনেক ভেবেচিন্তে বলেছিল, ওগুলো মনে ‌হয় assorted logenzes, তার দাদার বইয়ের তাকে এক দিন রঙচঙে একটা packet দেখে ‌হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখছে সবে - এমন সময় কোত্থেকে দাদা ছুটে এসে তার কানটা খুব জোরে মুলে দিয়ে বললো আমার chocolate-এ ‌‌‌‌হাত দিয়েছিস কেন?

অভিষেকের বুদ্ধির ওপরে অবশ্য র‌্যাম্বোর খুব-একটা ভরসা নেই। ঠিক করে যদি একটা জিনিস বুঝিয়ে বলতে পারে। বলে জানিস, packet-টার ওপরে একটা ‌মেয়ের ছবি আঁকা, ball দু’টো না ইয়াব্বড়ো! কি’রম chocolate রে বাবা?

র‌্যাম্বো ঠিক করে ফেলেছে honeymoon-এ যাওয়ার আগে বাবাকেই সে জিজ্ঞেশ করবে। বেড়ু-বেড়ুকে honeymoon-পদবাচ্য করতে গেলে কি কি করতে ‌হয়। বাবা নিশ্চয়ই জানবে। বাবার ঘরে অ্যাত্তো মোটা মোটা সব বই। আর বাবাও যদি না জানে তা‌‌’লে শেষমেষ পাড়ার ডাক্তারখানার রাজুদাকেই জিজ্ঞেশ করা যাবে। রাজুদার সঙ্গে অবশ্য খুব একটা দোস্তি নেই র‌্যাম্বোর। কয়েক বছর আগে যখন খুব শক্ত একটা অসুখ করেছিল তার, কিছুতেই ধরা পড়ছিল না, তখন ডাক্তারকাকু রাজুদাকে কি সব যেন বললো। তার পরের দিন খুব সক্কাল সক্কাল রাজুদা বাড়িতে এসে ‌হাজির। র‌্যাম্বোকে দেখে বিচ্ছিরিভাবে ‌হেসে ভালুকের মতো নাক চুলকুতে চুলকুতে বললো - এই ন্যাও শিশি, করে ফ্যালো হিশি।

কিন্ত এতো দিন ‌হয়ে গেলো - কাজের কাজটাই ‌হচ্ছে না র‌্যাম্বোর। মেয়েটা তার সঙ্গে সব সময় ‌হেসে ‌হেসে কথা বলে। অ্যাই তোর নাম কি রে? কোন class-এ পড়িস? কোন school? তবে প্রণয়িনীর মুখে তুই-তোকারি শুনে খুব একটা ভরসা পায়নি র‌্যাম্বো তার ‌হৃদয়ের কথা জানাতে। কিন্তু জানাতে তাকে তো ‌হবেই। রিতিক প্রেমের জন্যে এতো কিছু করছে, লাফাচ্ছে, ঝাঁপাচ্ছে - আর সে এক বার ইলু বলতে পারবে না? অভিষেক তাকে গল্প করেছে এক ছোটি সি ল্যভ স্টোরিতে তো একটা ছেলে তার চে’ বড়ো একটা মেয়েকে propose করেছিল। হ্যাঁ - বিয়ের কথাটা বলার আগে তাকে ilu বলতেই হবে - না ‌হলে মেয়েটা ভাববে ছেলেটা কি ‌হেঙলু রে বাবা।

এ’ সব কথা ভাবতে ভাবতে র‌্যাম্বোর মন উৎফুল্ল ‌হয়ে ওঠে। আনন্দের চোটে সে লাফাতে আরম্ভ করে - হ্যাঁ - ঘাবড়ে যাবেন না। পরশপাথর পড়েননি? প্রেমে পড়লে লোকের মনে পুলক জাগে। তখন তার শরীরের mechanism আরো energetic‌ হয়ে ওঠে।

পাজি ছেলে! দুপুরবেলা না ঘুমিয়ে লাফাচ্ছো? মা ঘরে ঢুকে র‌্যাম্বোকে ডেকে খুব করে বকে দেন। তা - মাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। তিনি তো আর বিজ্ঞান-টিজ্ঞান পড়েননি। তিনি জানবেন কি করে প্রেমে পড়লে মানুষের মস্তিষ্কে endorphin নামে এক ধরণের পদার্থ তয়ের ‌হয়, যার রাসায়নিক গঠন একদম morphin-এর মতোই, আর এর জন্যেই লোকে মাল-খাওয়া public-এর মতো আচরণ করে - এর জন্যেই র‌্যাম্বোর এতো নাচন-কোঁদন।

মা চলে যাওয়ার পরে র‌্যাম্বো ফোঁৎ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। শ্রেয়সী তুমি আমার - ‌হ্যাঁ -শুধু আমার।

কথায় বলে স্বয়ং ভাগ্যদেবী নাকি উদ্যোগী পুরুষের সহায় হন। র‌্যাম্বোর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটল না একদিন।

সেদিন - শনিবার বিকেলবেলা - দিদি library-তে গেছে বই আনবে বলে। calling বেলের শব্দ শুনে র‌্যাম্বো দরজা খুলে দেখে শ্রেয়সী - তার হৃদয়েশ্বরী।

র‌্যাম্বোর বুক দুরুদুরু করে ওঠে। কতো রজনীর পরে বঁধু আজি এসেছে লগন। মনের ভাব গোপন করে জানায় যে দিদি এক্ষুণি ফিরবে। তোমার সঙ্গে আমার একটা serious কথা আছে। শ্রেয়সীর পাশে সেও sofa-তে ধপ করে বসে পড়ে। তার মুখের দিকে চেয়ে আরো serious স্বরে বলে র‌্যাম্বো - I love you। আমায় বিয়ে করবে?

শ্রেয়সীকে কোনো কথা না বলতে দেখে র‌্যাম্বো মনে মনে একটু ‌হাসে। এটা সে জানে। মেয়েরা যখন চুপ করে থাকে তখন তার মানে ‌‌হ্যাঁ। আরো উৎসাহিত হয়ে সে যে কতো বড়ো পাগল-প্রেমিক তা প্রমাণ করার জন্যে শ্রেয়সীর গালে চপাৎ করে একটা চুমু খায়।

অসভ্য বাঁদর ছেলে! শ্রেয়সী র‌্যাম্বোর কান দু’টো খুব জোরে মুচড়ে দেয়। এখনো pant-এর chain আটকাতে মনে থাকে না এদিকে মুখে যতো পাকা পাকা কথা। দাঁড়া - এক্ষুণি তোর দিদিকে বলছি।

তার প্রাণেশ্বরীর মুখের ভাব ক্রমশ: ‌হিংস্র থেকে ‌হিংস্রতর ‌হতে থাকায় সেখানে থাকাটা আর সমীচিন বলে মনে করে না র‌্যাম্বো। সুট করে সরে পড়ে সে।

র‌্যাম্বোর প্রেমপর্বের এখানেই ইতি। প্রেমিকার ‌‌হাতের কানমলা খেয়ে আর ‌pant-এর chain আটকানো নিয়ে এতো বড়ো একটা অপবাদ দেওয়াতে তার জীবনে ভয়ঙ্কর বৈরাগ্য এসে গেছে। এখন সে প্রত্যেক শনিবার বিকেলে মন দিয়ে profit & loss-এর অঙ্ক করে। শ্রেয়সী অবশ্য আগের মতোই তাদের বাড়িতে যাতায়াত করে।





৯৭ - ০০

খেলবো না


এমন করে যাওয়ার কথা
বললে পরে খেলবো না,
থেমে যাবে শব্দ দিয়ে
আমার যত জাল বোনা।

ভড়কি দিয়ে...ভয় দেখিয়ে...ইশ!
ভালোবাসা পরখ করে নিস?
নেক্স্ট শোয়েতে মেয়ে হয়ে তুই আয় না চলে
মনের সুখে কানমলা খা বাবার কোলে!

বুকের মাঝে উথাল-পাথাল
স্নেহের নেশায় আমি মাতাল,
আর তো সবুর সয় না
কৃষ্ণ-পথে বয়েছে আজ আলোকেরই ঝর্ণা।

নিরুচ্চারিত


যখন তুমি শারদপ্রাতে উঠে
বাগানে ঘুরে বেড়াবে, গাছে গাছে জল দেবে আর
কখনো বা চেয়ে থাকবে হঠাতই উড়ে আসা বুলবুলিটার দিকে -
আমার বিষণ্ণ দুটি চোখ তোমায় অনুসরণ করবে।

যখন তুমি পড়তে পড়তে নিমগ্ন হয়ে যাবে
কোনো দিকে খেয়াল থাকবে না,
অলকরাশি কপালের ওপরে পড়ে তোমার মিষ্টি মুখখানিকে
আরো স্নিগ্ধ করে তুলবে -
আমার ব্যাকুল দুটি চোখ তোমায় অনুসরণ করবে।

যখন তুমি স্নান সেরে
শরীরে জুঁই ফুলের গন্ধ মেখে,
কালো চুলের ঢল নামিয়ে বারান্দায় দাঁড়াবে
আমার বিমুগ্ধ দুটি চোখ তোমায় অনুসরণ করবে।

যখন তুমি বিকেলে কলেজ থেকে ফিরে
অস্তগামী সূর্যকে দেখবে,
দমকা হাওয়ায় শাড়ীর প্রান্ত উড়িয়ে
আমার বুকে ঢেউ তুলবে তুমি -
আমার নীরব দুটি চোখ তোমায় অনুসরণ করবে।

যখন তুমি আবার সন্ধ্যায় পড়তে বসবে
কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই আনমনা হয়ে যাবে,
হাতের কলমটা খাতায় অজান্তে কতো না আঁকিবুকি কাটবে
আর ঠোটের কোণে এক চিলতে হাসি খেলা করবে -
আমার তৃষ্ণার্ত দুটি চোখ তোমায় অনুসরণ করবে।

যখন তুমি বালিশে মাথা এলিয়ে দেবে
অন্ধকার -
তবু আলোয় ভরে যাবে ঘর
মায়াময় হয়ে উঠবে তোমার মুখ
আমার ক্লান্ত দুটি চোখ তোমায় অনুসরণ করবে।

এই ভাবেই কেটে যাবে রাত
আসবে আরেক নতুন দিন,
গোপন কথাটি রবে নীরবে
বাজবে আমার বুকের মাঝে -
বলা হবে না তোমায় কোনো দিন।





Every Breath You Take - Police





৯৭ - ০০