Friday 13 June, 2008

বাবোস হ্যাঁকো হুক

নেংড়ের কথা

নেংড়ের কথা আবার কি? কোনো কথা নেই! একটা সাড়ে তিন বছরের ছেলে, সারা দিনটা যার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে কেটে যায়, আর রাত্তিরটা ফুটপাথের এক কোণায় - তার আবার কথা কিসের?

নেংড়ে কিচ্ছু জানেনা কি করে জানবে? বললে তো জানবে - কে বলবে? হঠাত এক দিন চোখ খুলে দেখে - আরে এইটা পিরথিবি নাকি?

নেংড়ে যখন জন্মেছিল, তখন খুউব শীত পড়তো কলকাতায়, সেদিন যীশুবাবার চোখের জলও জমে গেছিল

একা একা নেংড়ের ভয় করতো - ভীষণ ভয় এক দিন একটা মাউপুসির পেছনে দৌড়তে দৌড়তে - এটা কোন জায়গা?

দেখে বিশাল একটা বাড়ি, তার মধ্যে সবাই নাচছে, আর কি ধোঁয়া - ভগোমানের বাড়ি

নেংড়ে ভগোমান কথাটা জানে এরম আরো ক'টা কথা সে জানে, পোজাপুতি, পাউ - খিদে পেলে খায় যেদিন পায়না সেদিন কলের জল হিহিহি!!!!!

ভগোমানটা কি ভালো - মেয়ে ভগোমান! তিন তিনটে চোখ!! আর কত্তোগুলো করে ছেলেমেয়ে - নেংড়ের মতো একা নয়

ভগোমানের টানা টানা ভুরু দুটো আর লম্বা চুলটা দেখতে দেখতে নেংড়ে বলে ফেলে, চুপি চুপি, আমার যে কেউ নেই ভগোমান





পুন্নির কথা

পুন্নিটা মুন্নিটা! পাঁচ বছরের মেয়ে - দুষ্টু দুষ্টু দুষ্টু!!

বিষ্টিতে সারা শহর ভেসে গেছিল ও যেদিন পিরথিবিতে এসেছিল ওরও কেউ নেই, তাই একা একাই আকাশ থেকে নেমে আসা জলের ফোঁটাগুলোকে নিয়ে খেলতো আর বলতো, মুত্তো!!!!!

মানে মুক্তো - পুন্নির গোলাপি গাল দুটো হাসিতে ফেটে পড়তো আনন্দে





পুন্নি আর নেংড়ের কথা

সেদিন ভালো খাওয়া হয়েছিল একটা কাকু অনেক অনেক খাবার দিয়ে গেছে - বার্ডে কি?

পেটপুরে খেয়ে নেংড়ে তো ঘুম লাগিয়েছে পরের দিন সকালে - ওমা!

একটা মেয়ে তার চুল ধরে টানছে পালানোর চেষ্টা করতেই মেয়েটা তার ঠ্যাং ধরে টেনে আনলো - এই ভাইয়া!!!!!

আমি পুন্নি!! ভগোমানকে আমার কথা বলেছিলি না?

পুন্নিও ভগোমানকে চেনে? এবার নেংড়ের একটু সাহস হয়

আসলে ভগোমানের তো নানারকম কাজ থাকে, তাই ও পুন্নিকে পাঠিয়ে দিল, পুন্নিরাই ভগোমান আসলে

নেংড়ের ঠিক সেরমই মনে হয়, পুন্নি যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন কপালে চুমু খেয়ে ও বলে, দিদি তুই এত্তো ভালো - ঠিক সেই মেয়ে ভগোমানের মতো

বড়ো আপাকে কুচু কুচু করে দেয় নেংড়ে, মানে নাকে নাকে ঘষে দেয়, খিল খিল করে হাসতে হাসতে।

পুন্নি আর নেংড়ে এখন খুব মজায় আছে বিকেলবেলায় পার্কে বাচ্চাদের বাবোস নিয়ে খেলা করতে দেখে নেংড়েরও শখ হয়, তাই শুনে পুন্নি কোত্থেকে একটা পিচ্চি বাবোস নিয়ে এসেছে, ওদেরটা বড়ো - জালে লাগলে ওল ওল বলতে হয়

একটু ফাটা আর পুঁচকি বাবোসটা, তা হোক, সেইটে দেওয়ালে ছুঁড়ে আবার ফিরে এলে নেংড়ে চেঁচায় - বাবোস হ্যাঁকো হুক!!!!!

Monday 9 June, 2008

নীল পৃথিবী


নীল সূর্য নীল আকাশ নীল চাঁদ নীল গাছ।
নীল মাটি নীল বাতাস নীল সমুদ্র নীল মাছ।।
নীল ফুল নীল ফল নীল পাতা নীল স্বেদ।
নীল চোখ নীল চুল নীল চুম্বন নীল ক্লেদ।।
নীল পুরুষ নীল বীর্য নীল নারী নীল চেতনা।
নীল যৌবন নীল আলিঙ্গন নীল কামনা নীল বাসনা।।
নীল বিবাহ নীল বিচ্ছেদ নীল জীবন নীল মরণ।
নীল আমি নীল তুমি নীল কার্য নীল কারণ।।





৯৭ - ০০

Saturday 7 June, 2008

আকাশগঙ্গা


আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আমায় চিনতে তুমি পারো?
দু'টি চোখের নীরব ব্যথা পড়তে তুমি পারো?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, চুপ কেন তুমি আজ?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, কিসের এতো লাজ?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, ভাবছো এতো কি?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আমায় মনে পড়ে কি?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আকাশে থাকো যে কেন?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, এখানে আসো না কেন?
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, দারুণ ভালো থেকো!
আকাশগঙ্গা, আকাশগঙ্গা, আবার আমার কাছে এসো।





৯৭ - ০০

Wednesday 4 June, 2008

পুজো

পুজো মানে কালো মেঘের
হঠাৎ চলে যাওয়া,

পুজো মানে আকাশটাতে
নীলের ছোঁয়া লাগা


পুজো মানে শিউলি ফুলের

গন্ধে ভরা সকাল,

পুজো মানে সোনালী রোদের

স্পর্শে ভরা বিকাল


পুজো মানে রাশি রাশি

সারি সারি কাশফুলের দোলা,

পুজো মানে সুখের স্মৃতি দিয়ে

মনের দু:খগুলো ভোলা


পুজো মানে নতুন জামা

নতুন জুতো পরা,

পুজো মানে প্রথম প্রেম

প্রথম শাড়ি পরা


পুজো মানে গভীর রাত

তবু প্রচুর লোকজন,

আমার হাতে তোমার হাতের

নীরব সমর্পন -

আমার প্রথম...প্রথম...চুম্বন


পুজো মানে দারুণ ব্যাপার

খাওয়া যে জব্বর,

পুজো মানে প্যান্ডেলেতে
রাত্রি থেকে ভোর


পুজো মানে দিন গোণা

ঠাকুর আসবে কতোক্ষণ,

পুজো মানে মায়ের বিদায়

ঠাকুর যাবে কতোক্ষণ






৯৭ - ০০

Tuesday 3 June, 2008

বিবর্তন


যে সূর্য আজ আকাশের বুকে উঠেছে,
কালও সে উঠবে
যে নদী আজ সাগরের সাথে মিশে খিলখিলিয়ে হেসেছে,
কালও সে হাসবে
যে পাখি প্রথম-প্রণয়-সুরে আজ প্রভাতে গেয়েছে,
কালও সে গাইবে
কিন্তু যে ফুল আজ ফুটেছে নিভৃত নির্জনে,
কাল সে অশ্রু হয়ে ঝরিবে গোপনে





৯৭ - ০০